নগরীতে অস্বাভাবিক মৃত্যুর শিকার এক নারী ও এক পুরুষসহ দুজনের পরিচয় নিয়ে বিপাকে পড়েছে পুলিশ। চার বছর আগে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার হলেও এখনও তার পরিচয় উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। আর পুরুষের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে পাঁচ মাস আগে।
পরিচয় উদঘাটন না করে এ সংক্রান্ত দুটি মামলার দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করছেন না আদালত। আদালতের নির্দেশে বর্তমানে মামলা দুটি তদন্ত করছে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। কিন্তু দুজনের পরিচয় নিশ্চিত করতে না পারায় মামলা দুটি নিয়ে বিপাকে পড়েছে পিবিআই।
তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই, চট্টগ্রামের পরিদর্শক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, আদালতের নির্দেশে আমরা তদন্ত করছি। কিন্তু আগের তদন্তকারী সংস্থাগুলো যে সমস্যায় পড়েছিল আমরাও একই সমস্যায় পড়েছি। পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য যে এলাকা থেকে মরদেহ উদ্ধার হয়েছে তার আশেপাশে সব জায়গায় অনুসন্ধান করেছি। বিভিন্ন থানা এলাকায় গিয়েও তদন্ত করেছি। কিন্তু কোনভাবেই কেউ পরিচয় দিতে পারছে না।
তিনি বলেন, এ অবস্থায় আমরা যদি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করি আদালত সেটি গ্রহণ না-ও করতে পারেন। কারণ আগের তদন্তকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ করেননি। আমরাও তদন্তের চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত যেতে চাই। সেজন্য এখন অনলাইন গণমাধ্যমের সহযোগিতা নিচ্ছি।
সূত্রমতে, ২০১২ সালের ১২ অক্টোবর নগরীর পতেঙ্গা থানার দক্ষিণ মুসলিমাবাদ চরপাড়ায় জনৈক শফির ধানক্ষেত থেকে অজ্ঞাতনামা নারীর গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আনুমানিক ২৫ বছর বয়সী প্রায় ৫ ফুট লম্বা ওই নারীর পরণে ছিল লাল সালোয়ার কামিজ। মরদেহ উদ্ধারের সময়ই তার মুখমন্ডল বিকৃত হয়ে যায়।
মরদেহের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ওই নারীকে খুন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
পিবিআই পরিদর্শক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, পতেঙ্গা থানা প্রায় এক বছর তদন্ত করেও ওই নারীর পরিচয় নিশ্চিত করতে না পেরে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে সিআইডিও বছরখানেক তদন্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। আদালত সেই প্রতিবেদনও ফিরিয়ে দিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
এদিকে গত ১৬ মে নগরীর চান্দগাঁও থানার বাহির সিগন্যাল বেপারিপাড়ার বশির আহমেদ সওদাগরের বাড়ির সামনে থেকে আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সী এক পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রায় ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি লম্বা লোকটিকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয় বলে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
পিবিআই পরিদর্শক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, চান্দগাঁও থানা তদন্ত করে ওই লোকের পরিচয় জানতে পারেনি। আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। আমরা তদন্তে জানতে পেরেছি, লোকটি মানসিক ভারসাম্যহীন ভাসমান প্রকৃতির ছিল। কিন্তু তার নাম-পরিচয় কেউ জানাতে পারছে না।
এই অবস্থায় পিবিআই, চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে দুজনের পরিচয় সম্পর্কে তথ্য থাকলে তা অফিসের ফোন নম্বর-০৩১ ৬২১৫৭০, ০১৭৬৯৬৯০৩৩৪ এবং তদন্তকারী কর্মকর্তার ফোন নম্বরে-০১৭১৫৪৬৩১০৪ যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে।
Discussion about this post