তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের একটি মামলায় অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মীর রুহুল আমিন তাকে অব্যাহতি দেন।দুদকের আইনজীবী সানোয়ার আহমেদ লাভলু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মামলায় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে অব্যাহতি দিলেও অপর অভিযুক্ত ফখরুল আনোয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত।’
শর্ত ভঙ্গ করে জমি বরাদ্দের অভিযোগ এনে ২০০৭ সালের ২২ নভেম্বর ১৬১ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়। দুদকের তৎকালীন উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ডবলমুরিং থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ ছাড়া আরও দুই জনকে আসামি করা হয়। অপর অভিযুক্তরা ছিলেন ফটিকছড়ি এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত রফিকুল আনোয়ার ও তার ভাই ফখরুল আনোয়ার।
মন্ত্রীর আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল বেলাল বলেন, ‘মামলায় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ১৬১ ধারায় অভিযোগ আনা হলেও অভিযোগপত্রে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ আনা হয়নি। তাই শুনানি শেষে আদালত এই মামলা থেকে মন্ত্রীকে অব্যাহতি দিয়েছেন।’
আদালত সূত্র জানায়, ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের একই দফতরের দায়িত্বে ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ। ওই সময় তিনি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকায় কার পার্কিংয়ের জন্য বরাদ্দ করা একটি জায়গা তিন তারকা হোটেল ‘গোল্ডেন ইন’ নির্মাণের জন্য ইজারা দেওয়ার সুপারিশ করেন। ১ দশমিক ৪৪ বিঘা আয়তনের ওই জমির মূল্য ধরা হয়েছিল এক কোটি ৬৯ লাখ ২০৭ টাকা। পরে ‘লিজের শর্ত ভেঙে’ মেসার্স সানমার হোটেল লিমিটেডের নামে ওই জমির ইজারা নিবন্ধন করা হয়। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, সামনারকে জমিটি ইজারা দেওয়ার সময় শর্তের বাইরে তাদের কাছ থেকে ২ কোটি ৯২ লাখ ৭৮ হাজার ৭৪৮ টাকা বেশি আদায় করা হয়। এই অভিযোগে ২০০৭ সালের ২২ নভেম্বর দুদকের তৎকালীন উপ পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলায় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ মামলাটি বাতিলের আবেদন করলে ২০০৮ সালে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রুলজারি করেন। ২০১২ সালের ২০ নভেম্বর ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানিতে বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি ফরিদ আহমেদের বেঞ্চ মামলাটি বাতিল করে দেন। পরে আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করে দুদক। ২০১৬ সালের ২৮ মে সেই লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিলের আদেশ দেন। এরপর গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ।
Discussion about this post