কোন সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মাচারীকে গ্রেফতারের আগে সরকারি অনুমুতি লাগার বিষয়টি খুব বেশী হতাশার সৃষ্টি করছে । সরকারি চাকুরী আইন” শিরোনামে যে আইনটি নতুনভাবে আসছে সেখানে স্পষ্টভাবে এ কথাটি উল্লেখ থাকলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা বা দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ মূলত মুখ থুবরে পড়বে । দুদক বেশিরভাগ সময়ই প্রশ্নের মধ্যে পড়ে যায় এ কথার ক্ষেত্রে যে আসলে দুর্নীতি বন্ধে দুদকের কতটা সফলতা পেয়েছে ! প্রতিটি ক্ষেত্রে যেখানে দুর্নীতির লাগামহীন আচরণ সেখানে দুদকের একা বিপরীত অবস্থান যেমন কার্য করী নয় তেমনি সরকারের সহযোগীতা ছাড়া কোন দুর্নীতিই বন্ধ করা সম্ভব নয় ।
বিভিন্ন ধরণের অপকৌশল প্রয়োগ করে দুর্নীতি করা মানুষগুলো এমনিতেই লাগামহীন আর সেখানে যদি বলেই দেওয়া হয় তুমি মুক্ত তবে কতটা সুফল বয়ে আনতে পারবে দুদক ? অনেক তথ্য এখনও সাধারণ মানুষ জানেনা । তথ্য জানার জন্য কোন অফিসে গেলেও তার জন্যও ঘুষ চাওয়া হয় এমনও অভিযোগ যেখানে রয়েছে সেখানে দুর্নীতিবাজ কর্মকরতার বিরুদ্ধে চার্যশীট হওয়ার আগ পর্যন্ত গ্রেফতারের নির্দেশ না থাকলে দুদকের কাজ আসলে কি তা নিয়েই সন্দেহের সৃষ্টি হবে এবং দুর্নীতি আরও অনেক বেশী পরিমানে বেড়ে যাবে যা আমাদের দেশের কল্যানের বিপরীত হতে পারে । দুদকের বর্তমান বিদ্যমান আইনের ২৮ এর ১ ধারা অনুযায়ী সন্দেভাজন যে কোনদু্নীতিবাজ বা মামলার কোন আসামীকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করার বিধান রয়ছে । এ বিধান অনুযায়ী দুদক গত কিছুদিনে অনেক গুলো দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে ঘুষ গ্রহনের সময় হাতেনাতে গ্রেফতারও করেছে । গত কিছুদিনে দুদকের কার্যক্রম ছিলো বেশ আশাজাগানিয়া ।
যদিও বড় বড় দুর্নীতিবাজদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে কিছুটা ধীরগতি ছিলো কিন্তু তবুও দুর্নীতিবাজরা ভয় পেতে শুরু করেছিলো দুদকের বর্তমান কার্যক্রমে । দুর্নীতির গ্রাফ যে হারে বাড়ছে তাতে প্রতিটি প্রকল্পে সরকারের ক্ষতি অনেক বেশী । কিছুদিন আগে রাস্তার কাজগুলোর অনিয়ম নিয়ে লেখা হয়েছে অনেক বেশী । বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার কাজের ব্যয় সম্বলিত সাইনবোর্ড দেওয়ার কথা থাকলেও এখনও তা অনেক ক্ষেত্রেই তা দেওয়া হয়নি । এখানে যদি কোন দুর্নীতি হয় তবে কিভাবে মানুষ জানবে যে কার্য সম্পাদনকারী প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি করেছে বা করে নাই । যেখানে স্বচ্ছতার বেশী প্রয়োজন সেখানেই যখন দুদকের কার্যকারীতা বাড়ানোর ব্যপারে আমরা আবেদন করে আসছি সেখানে এমন আইন আরও দুর্নীতি বাড়িয়ে দিতে পারে !
আইন দুর্নীতি রোখার জন্যই করা প্রয়োজন । দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার জন্য আইনকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন । দুদক যাতে গ্রেফতারের পর কোন দোষী ব্যক্তির শাস্তির জন্য আরও বেশী শক্তিশালী অবস্থানে যেতে পারে আইন সেভাবে প্রনয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট আবেদন রাখছি । দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনা রাষ্ট্রের কর্তব্য । দু্র্নীতি বন্ধের জন্য দুদককে স্বাধীনভাবে কাজ করার প্রক্রিয়া আরও দ্রততর করায় সকলে সহায়ক ভূমিকা পালন করবেন এটাই আমাদের কামনা ।
সাঈদ চৌধুরী
সদস্য, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি
ও রসায়নবিদ শ্রীপুর, গাজীপুর
Discussion about this post