আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দুর্নীতিমুক্ত পাকিস্তান গড়ার প্রত্যয় নিয়ে ক্ষমতায় আসার পর দেশের উন্নতিতে একর পর এক নজরকাড়া পদক্ষেপ নিচ্ছেন পাকপ্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বারবার বলেছেন, দেশ চালানোর মতো অর্থ নেই পাকিস্তানে। দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক নেতারা সব লুটেপুটে খেয়েছেন। এবার সেসব ঘুষখোর-দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের ধরতে নতুন আইন করতে যাচ্ছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) এ নেতা।
লাহোরে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন আইন করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি রাষ্ট্রের অর্থসংকট দূর করতে বিদেশে পাচার হওয়া এসব অর্থ ফিরিয়ে আনারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইমরান।
সংবাদ সম্মেলনে ইমরান বলেন, চরম অর্থসংকটে রয়েছে পাকিস্তান। চুরি হওয়া দেশের সম্পদ উদ্ধার করতে পারলেই সে সংকট দূরীভূত হবে। তিনি বলেন, গত কয়েক দশকে পাকিস্তানের কোটি কোটি ডলার রাষ্ট্রীয় সম্পদ চুরি হয়েছে। সেগুলো দেশ থেকে পাচার হয়েছে।
দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের ধরতে নতুন আইন করার বিষয়ে ইমরান বলেন, আইনটি হলে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের চিহ্নিত করা যাবে। এসব নেতার কাছ থেকে অসদুপায়ে অর্জিত প্রায় ২০ শতাংশ সম্পদ রাষ্ট্রের কাজে লাগানো যাবে।
আর বাকি ৮০ শতাংশ অর্থ দিয়ে পাকিস্তানের ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি। তবে ইমরান জানান, নতুন আইন তৈরির বিলটি কয়েক দিনের মধ্যে পার্লামেন্টে তোলা হবে।
দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক নেতা ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাহায্যকারীকে বিশেষ পুরস্কার দেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন ইমরান। এদিকে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে ইমরান খানের ‘ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন’ কর্মসূচি।
তার এ স্বচ্ছতা অভিযানের পদক্ষেপের ঘটনায় রাজনৈতিক মহল বলছে, ভারতের দেখানো পথেই হাঁটছে পাকিস্তান। ইমরান সরকারের ‘ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন পাকিস্তান’ কর্মসূচি প্রাথমিকভাবে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও বেলুচিস্তানে শুরু হয়েছে। ইমরান খানের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা মালিক আমিন আসলাম বলেন, দেশজুড়ে ৬ জন স্বচ্ছতা দূত নিয়োগ করা হবে।
একই সঙ্গে দেশের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ধর্মীয় নেতা, বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও শামিল করা হবে এই অভিযানে। এছাড়া পাকিস্তানের বেসরকারি সংস্থা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই অভিযানে কাজ করার জন্য আহ্বান জানানো হবে। শুধু স্বচ্ছতা অভিযানই নয়।
দেশ থেকে পোলিও দূরীকরণেরও উদ্যোগ নিয়েছেন ইমরান খান। পাকিস্তানের মতো দেশে পোলিও দূরীকরণের মতো অভিযান সফল করা বেশ কঠিন। কারণ এ বিষয়ে দেশে বেশ কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। ইমরান খান পোলিও দূরীকরণের জন্য ৫ বছরের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন।
২০১৪ সালের ২ অক্টোবর স্বচ্ছতা অভিযান চালু করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২০১৯ সালের ২ অক্টোবরের মধ্যে দেশকে নির্মল করে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে মোদি সরকারের। সূত্র: এএফপি, ডন।
Discussion about this post