দুর্নীতি দমন কমিশনের এক যুগ পূর্তি হয়েছে আজ (২০ নভেম্বর’২০১৬) (দুদক)। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন সাবেক ‘দুর্নীতি দমন ব্যুরো’ বিলুপ্ত করে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০৪ সালের ২১ নভেম্বর প্রতিষ্ঠা করে ‘দুদক’। এরপর নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে কেটে গেছে এক যুগ।
প্রতিষ্ঠার পর প্রায় ৩ বছর প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সুলতান হোসেন খান। তার ৪ বছরের মেয়াদ পূরণের আগেই সেনাসমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় লে. জে. (অব.)হাসান মশহুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে কমিশন পুনর্গঠন করা হয়।
তবে হাসান মশহুদ চৌধুরীরও মেয়াদ পূরণ করা হয়নি। এরপর সাবেক সচিব গোলাম রহমানের নেতৃত্বে তৃতীয়বারের মতো পুনর্গঠন করা হয় দুদক। চেয়ারম্যান হিসেবে তিনিই প্রথম দুদকে মেয়াদ শেষ করে বিদায় নেন। এরই মধ্যে আইনে সংশোধনী এনে দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের মেয়াদকাল ৫ বছরে উন্নীত করা হয়। গোলাম রহমানের মেয়াদ শেষ হলে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দুদক কমিশনার মো. বদিউজ্জামান। ১৩ মার্চ তিনি অবসরে গেলে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব ইকবাল মাহমুদ।
গত এক যুগে দুদক আইন সংশোধন হয়েছে দু’বার। একটি হচ্ছে, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন (সংশোধনী)-২০১৩’ এবং ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০১৬’। মাঝে ২০০৭ সালে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে দুদক আইনে সংশোধনী আনা হলেও পরে সংসদ সেটি অনুমোদন করেনি। ২০০৯ সালে কয়েকটি ধারা- উপধারায় সংশোধনী আনা হলে উচ্চ আদালত সেটি অবৈধ ঘোষণা করেন।
এক যুগের পথ চলায় নানা আলোচনা –সমালোচনার জন্ম দিয়েছে দুদক। এর মধ্যে ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের সময় দুর্নীতিবিরোধী অভিযান, শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক, ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার, অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের ট্রুথ কমিশনে প্রেরণ ছিল সে সময়ের আলোচিত ঘটনা।
তবে ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পুনর্গঠিত দুদক অনেকটাই নখদন্তহীন হয়ে পড়ে। এ সময়ে প্রথমে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পরে ‘নির্দোষ’ হিসেবে প্রভাবশালীদের দায়মুক্তি, অনুসন্ধান-তদন্তের নামে হয়রানি, রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রতিপক্ষকে দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার সমালোচনাও রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।
Discussion about this post