জরুরি অবস্থার সময় দুদকের করা দুর্নীতির মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। একইসঙ্গে মামলার ধার্য তারিখে হাজিরা থেকে অব্যাহতিও পেয়েছেন বর্তমান সরকারের এই মন্ত্রী। একই মামলার আরেক আসামি আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আনোয়ারও জামিন পেয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো.শাহে নূরের আদালতে মন্ত্রীসহ দুই আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী মোশাররফ ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারেও একই দপ্তরের দায়িত্বে ছিলেন। সেই সময়ে সরকারি জমি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের উপ পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ২০০৭ সালের ২২ শে নভেম্বর চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানায় এ মামলা দায়ের করেছিলেন। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ ছাড়াও ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি রফিকুল আনোয়ার ও তার ভাই হোটেল গোল্ডেন ইন লিমিডেটের পরিচালক ফখরুল আনোয়ারকে এ মামলার আসামি করা হয়।
জরুরি অবস্থা শেষে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফকে ওই দুর্নীতির মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল হাইকোর্ট। তবে হাইকোর্টের সেই আদেশ প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চে টিকেনি। গত বছরের ৮ মে আপিল বিভাগের এই আদেশ আসার পর ওই দুর্নীতি মামলার তদন্ত আবারও শুরু করেছে দুদক।
দুদকের কৌঁসুলি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাবলু গণমাধ্যমকে জানান, মামলা সচল হওয়ার পর মন্ত্রীসহ দুজন আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানালে আদালত মঞ্জুর করেন। আরেক আসামি আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ রফিকুল আনোয়ার মারা গেছেন বলে আসামিপক্ষের আইনজীবী আদালতকে অবহিত করেছেন। আদালত এই বিষয়ে পুলিশ প্রতিবেদন চেয়েছেন।
এছাড়া ফখরুল আনোয়ারের আইনজীবী মামলা স্থগিতে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে উল্লেখ করে তদন্ত কার্যক্রম স্থগিত চেয়েছিলেন। আদালত সেটি নাকচ করেছেন বলে দুদক কৌঁসুলি জানান।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, মোশাররফ হোসেন চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকায় কার পার্কিংয়ের জন্য বরাদ্দ করা একটি জায়গা তিন তারকা হোটেল গোল্ডেন ইন নির্মাণের জন্য ইজারা দেওয়ার সুপারিশ করেন।
১ দশমিক ৪৪ বিঘা আয়তনের ওই জমির মূল্য ধরা হয় এক কোটি ৬৯ লাখ ২০৭ টাকা। পরে ‘লিজের শর্ত ভেঙে’ মেসার্স সানমার হোটেল লিমিটেডের নামে ওই জমির ইজারা নিবন্ধন করা হয়।
এক্ষেত্রে দলিলে উল্লেখ করা দরের চেয়ে সানমার হোটেলের কাছ থেকে ২ কোটি ৯২ লাখ ৭৮ হাজার ৭৪৮ টাকা বেশি আদায় করা হয় বলে দুদকের এজাহারে বলা হয়।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ মামলাটি বাতিলের আবেদন করলে ২০০৮ সালে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রুল জারি করে।
ওই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি করে ২০১২ সালের ২০ নভেম্বর বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি ফরিদ আহমেদের বেঞ্চ মামলাটি বাতিল করে দেয়।
পরে এর বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করে দুদক। সেই লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিলের আদেশ দেন।
Discussion about this post