মহেশখালীর মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের দুর্নীতি মামলায় কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনকে আবারো কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগ কর্তৃক নির্দেশিত হয়েই গতকাল রোববার কক্সবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। এসময় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ তৌফিক আজিজের আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেয়।
জানা গেছে, ইতিপূর্বে হাইকোর্ট থেকে জামিনপ্রাপ্ত মো. রুহুল আমিনের জামিনের আদেশ বাতিল করতে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল আবেদন দায়ের করে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে এবং আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও মীর্জা হোসেন হায়দার এর সমন্বয়ে গঠিত আপীল বিভাগের তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ হাইকোর্টের দেয়া মো. রুহুল আমিনের জামিনের আদেশ বাতিল করে তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। রাষ্ট্র এবং আসামি পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষেই আদালত এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
সেই আদেশের সূত্র ধরে রবিবার সাবেক জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন কক্সবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন। এ নিয়ে চলতি বছরেই দুইবার আলোচিত মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের দুর্নীতি মামলায় তাকে কারাগারে যেতে হলো।
উল্লেখ্য, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা জমির বিপরীতে ভুয়া মালিকানার দলিল তৈরি করে ক্ষতিপূরণের ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে ডিসি রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মাতারবাড়ির কায়সার চৌধুরী বাদী হয়ে কক্সবাজারের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন, এডিসি (রাজস্ব) জাফর আলমসহ ২৩ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীকালে আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য দুদক’কে দায়িত্ব দেন। দুদক মামলার তদন্ত পরবর্তী চলতি বছরের ৩ মে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে। চার্জশিটে কক্সবাজারের তৎকালীন জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাফর আলম, সার্ভেয়ার, কানুনগোসহ ১৩ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ২৩ জন স্থানীয় বাসিন্দাসহ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন দুদকের উপ-পরিচালক সৈয়দ আহমেদ রাসেল।
ওই মামলায় দীর্ঘদিন উচ্চ আদালতে জামিনপ্রাপ্ত ছিলেন মো. রুহুল আমিন। ওই জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে চলতি বছরের ২২ মে প্রথমবারের মতো নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে দ্বিতীয়বারের মতো উচ্চ আদালত থেকে জামিনে নিয়ে তিনি কারা ফটক পার হতে সমর্থ হন। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ ও জামিনের বিরোধিতা করে লিভ টু আপিল আবেদন করলে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ মো. রুহুল আমিনের জামিনাদেশ বাতিল করে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ প্রদান করেন।
Discussion about this post