প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে ১৪৪ দশমিক ৮১ লাখ মেট্রিক টন চাহিদার বিপরীতে বর্তমানে দুধের উৎপাদন হচ্ছে ৬৯ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অজয় কুমার রায় বাংলানিউজকে বলেন, দুধের যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে তার অর্ধেকও উৎপাদন হচ্ছে না। এর অন্যতম কারণ খামারিরা অব্যাহতভাবে লোকসানে থাকায় দুধ উৎপাদনের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। একটি দুগ্ধ গাভীর পেছনে যে পরিমাণ খরচ হয় তা ওঠাতে পারেন না খামারিরা। দুধের দাম ন্যূনতম ৫০ টাকা লিটার হওয়া উচিত। ৫০ টাকার নিচে কখনও দুধ বিক্রি হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। সেটা যে অঞ্চলেই হোক।
দুধের উৎপাদন বাড়াতে সরকার নানাবিধ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে জানিয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, খামারির সংখ্যা বৃদ্ধিতে স্বল্প সুধে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। মাত্র ৫ শতাংশ সুধের বিনিময়ে ঋণের ব্যবস্থা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিটি গাভী যেন দুধ দেয় এজন্য খামারিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। গাভীর বাচ্চা মৃত্যুর হার রোধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
খামারিদের বাঁচাতে পারলে এই শিল্প বিকশিত হবে বলেও জানান অজয় কুমার রায়।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২০০৯-১০ অর্থবছরে দেশে দুধ উৎপাদিত হয়েছিল প্রায় ২৩ লাখ ৬০ হাজার টন, ২০১০-১১ অর্থবছরে তা ২৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ২৯ লাখ ৫০ হাজার টন। ২০১১-১২ অর্থবছরে ৩৪ লাখ ৬০ হাজার টন। গত তিন বছরে তা আরও ২৫ লাখ টন বেড়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৬৯ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন।
দেশে তরল দুধের চাহিদা প্রায় পুরোটাই মেটায় দেশীয় খামারি ও দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কোম্পানিগুলো। চাহিদার আলোকে এ খাতে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় প্রায় ৪৭ হাজার ৭১০টি ডেইরি খামার। এরমধ্যে আটটি বড় কোম্পানি। প্রাণ ও মিল্কভিটা আবার গুঁড়াদুধ তৈরির শিল্পও গড়ে তুলেছে। তরল দুধের সিংহভাগই আসে পাবনা, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, সাতক্ষীরা অঞ্চল থেকে।
বর্তমানে দুগ্ধ উৎপাদনের তুলনায় বিপুল ঘাটতি মেটাতে গুঁড়াদুধ আমদানিতে প্রতি বছর কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। অথচ সরকার এ খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঋণ সুবিধা দিলে একদিকে দুধের উৎপাদন বাড়বে, অন্যদিকে আমদানি বন্ধ হলে বিপুল পরিমাণে বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
Discussion about this post