কানাডায় প্রায় এক দশক আগে নতুন আরেক প্রজাতির ডাইনোসরের জীবাশ্মের সন্ধান পাওয়া যায়। এই ডাইনোসরের অস্থি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় তার মাথায় রয়েছে শিংও। যদিও শিংওয়ালা ডাইনোসর এটাই প্রথম নয়। তবুও এর শারীরিক গঠন অন্যান্য শিংওয়ালা ডাইনোসরের তুলনায় ভিন্ন ও অদ্ভূত বলে দাবি করছেন গবেষকরা।
পাতালপুরি থেকে উঠে আসা শিংওয়ালা এই আগুন্তুককে হেল-বয় নামে সম্বোধন করছেন গবেষকরা।
এখন থেকে দশবছর আগে পিটার হিউজ নামের এক ব্যক্তি দক্ষিণ-পূর্ব আলবার্তার ওল্ডম্যান নদীর খাঁড়িতে এই ডাইনোসরটির কিছু অস্থি খুঁজে পান। বিজ্ঞানীরা এসব অস্থি গবেষণা করে ধারণা করেন এরা সম্ভবত ট্রাইসেরাটপস প্রজাতির ডাইনোসরের নিকটবর্তী কোনো প্রজাতি। তবে নতুন প্রজাতির এই ডাইনোসরের সঙ্গে বিজ্ঞানের এটাই প্রথম পরিচয়।
কানাডার আলবার্তার প্রত্নজীববিদ্যা রয়েল টেরেল জাদুঘরের ডক্টর কালেব ব্রাউন জানান, হেল-বয় নামের নতুন এই ডাইনোসরের নমুনাটি আলবার্তার এমন এক ভৌগলিক জায়গায় পাওয়া গেছে, যেখানে এর আগে এমন শিংওয়ালা ডাইনোসর দেখা যায়নি।
ডক্টর ব্রাউন আরও জানান, পরীক্ষাগারে ধীরে ধীরে এই ডাইনোসরটির পুরো অঙ্গব্যবচ্ছেদ তৈরি করা হয়েছে। পুরো ডাইনেসরটি তৈরির পর তা সম্পূর্ণ আলাদা ও উদ্ভট বাহ্যিক রূপ নেয়।
শুধু তাই নয়, পরীক্ষাগারে এই ডাইনোসরের ডায়াগ্রাম দেখে চমকে গেছেন অন্য গবেষকরাও। ডাইনোসরটির অন্য শিংওয়ালা ডাইনোসরের সঙ্গে পার্থক্য হলো এর আকার, মুখের সামনের অংশের শিংয়ের আকৃতি এবং মাথার পেছনের অংশে ঢালের মতো ঝালর। এটি অনেক ক্ষেত্রেই ট্রাইসেরাট্রপস প্রজাতির ডাইনোসরের মতোই বলে মনে করেন গবেষকরা।
ব্রাউনের ভাষ্যমতে, ডাইনোসরটির সবচেয়ে আলাদা বিষয় হলো- এর মাথার বিশাল ঝালর ও মাথার মধ্যভাগে তীক্ষ্ণ স্পাইক। যা সব মিলিয়ে দেখতে প্রায় মুকুটের মতো।
গবেষণার সহ-গবেষক ডোনাল্ড হেন্ডারসন ডাইনোসরটির নাম দিয়েছেন রিগেলিসেরাটপস পিটারহিউজি। মূলত ডাইনোসরটির মাথায় ঝালরের মতো মুকুট ও মূল আবিষ্কারক পিটার হিউজের নাম অনুসারে এই নাম রাখা হয়েছে।
পৃথিবীতে এ যাবতকালে আগত শিংওয়ালা ডাইনোসরদের দুটি দলে বিভক্ত করা হয়েছে। কসমোসোরিনস (নাকের ওপর ছোট শিং ও চোখের ওপর বড় শিং বিশিষ্ট) এবং সেনট্রোসোরিনস (নাকের ওপর বড় শিং ও চোখের ওপর ছোট শিং এবং মাথায় ছোট ঝালরবিশিষ্ট) ডাইনোসর।
ডক্টর ব্রাউন জানান, হেল-বয় নামের নতুন এ প্রজাতির ডাইনোসরটি কসমোসোরিনসের অন্তর্ভুক্ত হলেও এর সঙ্গে সেনট্রোসোরিনসের বেশি মিল রয়েছে।
তিনি আরও জানান, পৃথিবী থেকে সেনট্রোসোরিনস বিদায় নেওয়ার পর পরই এদের আগমন।
রিগেলিসেরাটপস পিটারহিউজি ডাইনোসরের এ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে কারেন্ট বায়োলজি জার্নালে।
Discussion about this post