শেরপুরের মধুটিলা ইকোপার্কে নববধূর শ্লীলতাহানির ভিডিও চিত্র মোবাইল ফোনে ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে স্বামীসহ পাঁচজন কে তিন থেকে ১২ বছরের সশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়েছে।
আজ সোমবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে শেরপুরের যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতের বিচারক মো. হারুন অর-রশীদ এ সাজার রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডিতরা হলেন, মধুটিলা ইকোপার্ক এলাকার বখাটে শফিকুল ইসলাম, আব্দুস ছালাম, মনু মিয়া, ইজারাদার প্রতিনিধি গোলাম মোস্তফা ও নজরুল ইসলাম বুলবুল।
এ মামলার স্পেশাল পিপি গোলাম কিবরিয়া বুলু জানান, রায়ে শফিকুল ইসলামকে পর্নোগ্রাফি আইনের পর্নোগ্রাফি ধারণ ও সরবরাহের দু’টি ধারায় ১২ বছরের কারাদ- দেড়লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে দেড় বছরের কারাদ- দেয়া হয়েছে।
আসামী আব্দুস সালাম ও মনু মিয়াকে সহযোগিতার অভিযোগে ৭ বছরের কারাদণ্ড ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আসামী গোলাম মোস্তফাকে পর্নোগ্রাফি সরবরাহের অভিযোগে ৫ বছরের কারাদ- ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ওই নববধুর স্বামী নজরুল ইসলাম বুলবুলকে পর্ণগ্রাফি সহযোগিতার অভিযোগে ৭ বছরের কারাদ- ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
রায়ে আদালত জরিমানার টাকা আদায় হলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ভিকটিমকে প্রদানের আদেশ দেয়া হয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালের ৩ নভেম্বর ওই নববধুকে শ্লীলতাহানির মামলায় নারী ও নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ওই ৫ জনের প্রত্যেকের ৭ বছরের কারাদ- প্রদান করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই নালিতাবাড়ী উপজেলার মধুটিলা ইকোপার্কে স্বামীর সাথে বেড়াতে যায়। ঐ সময় বখাটেরা নববধুকে অস্ত্রের মুখে স্বামীর সহযোগিতায় জোরপূর্বক শ্লীলতাহানি করে মোবাইল ফোনে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে। পরে ওই নববধুর পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে না পেয়ে সাজাপ্রাপ্তরা মোবাইলে ব্লুট্রুথ ও ইন্টারনেটে সেই অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেয়।
এ ঘটনায় নববধূ বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইনে নালিতাবাড়ী থানায় ২০১৪ সালের ১৩ আগস্ট দু’টি পৃথক মামলা দায়ের করেন।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় তদন্ত শেষে পুলিশ সংশ্লিষ্ট আইনে নববধূর স্বামী নজরুল ইসলাম বুলবুল ও ইকোপার্কের কর্মচারী গোলাম মোস্তফাসহ ৫ আসামীর বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর আদালতে পৃথক দু’টি অভিযোগপত্র দাখিল করে। ইতিপূর্বে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল শ্লীলতাহানির মামলায় গত বছরের ৩ নভেম্বর ঐ ৫ আসামীর প্রত্যেককে ৭ বছর করে কারাদ- প্রদান করেন।
Discussion about this post