নিজস্ব প্রতিবেদক: এখন থেকে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে রাজধানীর বাসিন্দারা ঘরে বসেই নিজেদের তথ্য ফরম পূরণ করতে পারবেন। আর এ তথ্য সরাসরি ডিএমপির সার্ভারেও জমা হবে। এর আগে নাগরিকদের অ্যানালগ পদ্ধতিতে তথ্য ফরম পূরণ করে থানায় জমা দিতে হতো। যা ছিল কষ্টসাধ্য এবং সাময়সাপেক্ষ।
আজ সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সিটিজেন ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিআইএমএস) বা নাগরিক তথ্য ব্যবস্থাপনার পদ্ধতির একটি অ্যাপস উদ্বোধন করে কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া এই তথ্য জানান।
ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, আগের ম্যানুয়ালি নাগরিক তথ্য সংগ্রহ করা হতো। থানা পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করত। পরে সব তথ্য যাচাই-বাছাই করে সিস্টেমে এন্ট্রি দেয়া হতো। এতে লোকবল ও সময় দুটিই বেশি লাগত। কিন্তু এখন এই অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিকরা নিজেদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তথ্য দিতে পারবেন। পরে থানার পুলিশের গ্রাউন্ড ভেরিফিকেশন করার পর এই তথ্য সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তবে এখন ম্যানুয়ালি ও ডিজিটালি এই উভয়ভাবেই নাগরিক তথ্য সংগ্রহের কাজ করা যাবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, এর বাস্তব একটি প্রয়োগ হচ্ছে ডিএমপির সিআইএমএস মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। আজ থেকে অ্যাপটি গুগল প্লেস্টোরে পাওয়া যাবে। নাগরিকরা অ্যাপটি নিজেদের স্মার্টফোনে ডাউনলোড করে, ব্যবহার করতে পারবেন।
দেশের জঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, ২০১৬ সালের হলি আর্টিসানে মর্মান্তিক জঙ্গি হামলার পর ঢাকা মহানগরীতে তেমন বড় ধরনের জঙ্গিদের আস্তানা গড়ে উঠেনি এবং জঙ্গিরা তৈরি করতে পারেনি। এর অন্যতম একটি কারণ হলো, নাগরিক ডাটাবেস থাকার কারণে জঙ্গিরা ঢাকা শহরে বাসা ভাড়া নিতে পারেনি বা অবস্থান করতে পারেননি। জঙ্গি দমনে এই সিস্টেম একটি যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে। এ ছাড়া আমাদের অপরাধ ডিটেকশন এবং প্রিভেনশন এ ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। এছাড়া, টেন্ডারবাজি, ছিনতাই, রাহাজানি ও চাঁদাবাজি দমনেও নাগরিক তথ্য ভান্ডার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১৬ সালে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া শুরু করি। আর আজকে পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর ৭২ লাখ নাগরিকদের তথ্য আমাদের এই সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখন আমরা যে সিআইএমএস তথ্যভান্ডার তৈরি করেছি, এর কারণে নগরীতে কেউ নিজের পরিচয় লুকিয়ে বাসা ভাড়া নিতে পারবেন না এবং বাসা তৈরিও করতে পারেন না।
জানা গেছে, এই অ্যাপসের পরিবারের সদস্য সংখ্যা, তাদের নাম, গৃহপরিচারিকার নাম, গাড়ি চালকের নাম, এনআইডি নম্বরসহ আরও কিছু তথ্য ইনপুট দিতে দেয়ার পর সাবমিট করতে হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ সেটি কোয়ারি শেষে ফিরতি বার্তায় নাগরিককে জানিয়ে দেবেন তার তথ্য ফরমটা যথাযথভাবে নিবন্ধিত হয়েছে। আর যদি কোনও তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হয় তাও জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে CIMS DMP লিখে সার্চ দিলেই এই অ্যাপসটি চলে আসবে।
Discussion about this post