নারী যাত্রীকে দাঁড় করিয়ে রেখে নারী ও শিশুদের জন্য নির্ধারিত আসনে বসায় পুরুষ যাত্রী এবং বাসের চালক-হেলপারকে ভর্ৎসনা করেছেন বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
পরবর্তীতে এমন কাজ করলে জরিমানাসহ কারাদণ্ড দেয়া হবে বলে সাবধান করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সুজিত হাওলাদার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর ১টার দিকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ৮ নম্বরের একটি বাস থামায় পুলিশ। বাসে সংরক্ষিত নারী ও শিশুদের ৯টি আসন রয়েছে কিনা জানতে চান বিআরটি-এর ৪নং আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুজিত হাওলাদার। উত্তরে হেলপার আনিস হ্যাঁ বলে জানান।
সংরক্ষিত আসন থাকলেও নারী যাত্রীদের দাঁড় করিয়ে রাখার কারণ জানতে চান তিনি। জবাবে হেলপার বলেন, আসন খালি রেখে কোনো যাত্রী দাঁড়িয়ে থাকতে চান না। এছাড়া নারী যাত্রীরা পরে বাসে উঠেছেন।
এমন উত্তরে ম্যাজিস্ট্রেট সুজিত ক্ষুব্ধ হয়ে বাসে উঠে সংরক্ষিত আসনে থাকা পুরুষ যাত্রীদের নিচে নামিয়ে আনেন। অবস্থা বেগতিক দেখে অভিযুক্তরা আদালতের কাছে দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চান। পরে আদালত ‘কখনো এমন কাজ করবেন না’ এমন প্রতিশ্রুতি আদায় করে জরিমানা ছাড়াই সবাইকে ছেড়ে দেন।
এছাড়া হেলপারকে বাসের দুই পাশে বিআরটিএর নির্ধারিত ভাড়ার ছয়টি তালিকা টাঙানো ও নারীকে দাঁড় করিয়ে না রাখার নির্দেশনা দেন আদালত।
আদালতের ভর্ৎসনার বিষয়ে বাসের নারী আসনে বসা যাত্রী আলমগীর হোসেন বলেন, গাবতলী থেকে ফার্মগেটে আসার জন্য বাসে উঠেছিলাম। তখন কোনো নারী যাত্রী ছিলেন না। শ্যামলীতে আসার পর যাত্রীতে বাস ভরে যায়। এরমধ্যে বেশ কয়েকজন নারী দাঁড়িয়ে ছিলেন।
আদালতে ভর্ৎসনায় বিব্রত আলমগীর বলেন, বিষয়টি সত্যি লজ্জার। এমনটি আসলে হওয়া উচিত নয়।
এ ব্যাপারে এর আগে বিআরটিএর চেয়ারম্যান মো. মশিয়ার রহমান বলেছিলেন, রাজধানীতে সিটিং সার্ভিসের কোনো অনুমোদন নেই। অননুমোদিত যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শুধু সিটিং সার্ভিস বন্ধ নয়, যাত্রী হয়রানি রোধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরও জানিয়েছিলেন, হয়রানি রোধে প্রাথমিক পর্যায়ে রাজধানীর পাঁচটি স্থানে সপ্তাহে তিনদিন অভিযান চলবে। স্থানগুলো হলো- আসাদগেট, বিমানবন্দর বাসস্ট্যান্ডে সড়কের পশ্চিম পাশে, রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে, আগারগাঁওয়ে (আইডিবি ভবন) এবং যাত্রাবাড়ী চাইপাই রেস্টুরেন্টের সামনে।
Discussion about this post