নিউইয়র্কে বাংলাদেশি এক কূটনীতিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত কূটনীতিকের নাম শাহেদুল ইসলাম (৪৫)। তার পদবী ডেপুটি কনসাল জেনারেল অব বাংলাদেশ। তিনি কুইন্সের পাশেই জ্যামাইকা স্টেটে বসবাস করছেন।
ওই কূটনীতিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, নিউইয়র্কে তার বাসায় এক বাংলাদেশি নাগরিককে তিন বছরের বেশি সময় ধরে সহিংস নির্যাতন ও হুমকি দিয়ে বিনা বেতনে কাজ করতে বাধ্য করেছেন। কুইন্স কাউন্টির অ্যাটর্নির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এই সংক্রান্ত বিশদ বিবরণও রয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৩ জুন) যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর প্রকাশ করেছে।
খবরে বলা হয়, বাংলাদেশি এক শ্রমিক যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর পরই অভিযুক্ত শাহেদুল ইসলাম তার পাসপোর্ট কেড়ে নেন এবং তাকে দিয়ে দৈনিক আঠারো ঘণ্টা কাজ করতে বাধ্য করান বলে অভিযোগ এসেছে।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল শামিম আহসান জানিয়েছেন, অভিযুক্ত শাহেদুল ইসলামকে ৫০ হাজার ডলার বন্ডে জামিন আদেশ দেয়া হয়েছে। তবে তিনি এখনো মুক্ত হননি। ১২ জুন সকালে পুলিশের হাতে আটক হন তিনি।
নিউইয়র্কের কুইন্সবরোর অ্যাটর্নি রিচার্ড ব্রাউন এমন অভিযোগকে খুবই উদ্বেগজনক বলে বর্ণনা করেছেন। আগামী ২৮ জুন শাহেদুল ইসলামকে আবারও আদালতে হাজির হতে হবে।
বাংলাদেশি এই দূতাবাস কর্মকর্তা আনুমানিক ২০১২ সাল থেকে ২০১৬ সালের মে মাস পর্যন্ত কোনও ধরনের বেতন প্রদান না করেই মোহাম্মদ আমিন নামের এক ব্যক্তিকে তার বাড়িতে কাজ করতে বাধ্য করেন।
এরপর মোহাম্মদ আমিন গত বছরের মে মাসে শাহেদুল ইসলামের বাড়ি থেকে পালিয়ে গেয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান।
ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি রিচার্ড এ ব্রাউন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই ধরনের অভিযোগ অত্যন্ত উদ্বেগজনক। একজন কূটনীতিক তার বাড়িতে আরেকজনকে কাজে বাধ্য করতে শারীরিক জোর খাটিয়েছেন এবং হুমকি দিয়েছেন।
সেই সঙ্গে প্রথম দিন থেকেই ওই কর্মীকে কাজে আটকে রাখার জন্য তার পাসপোর্ট নিয়ে নিয়েছেন। তাকে বেতন দিতে অস্বীকার করেছেন এবং অন্য দেশে থাকা তার পরিবারকে বিপদে ফেলার ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। এইসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে নিশ্চিতভাবেই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তার জন্য শাস্তি পেতে হবে বলে ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই কূটনীতিকের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে ১৫ বছরের জেল খাটতে হতে পারে।
এদিকে, নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল শামিম আহসান বলেন, তারা মনে করেন অভিযোগকারী ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের আশায় এ ধরনের অভিযোগ করেছেন যা সত্য নয়।
Discussion about this post