আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সৌদি আরবে নারীদের গাড়ি চালানোর অধিকার আদায়ে সক্রিয় ভূমিকা রাখা দেশটির প্রখ্যাত আইনজীবী ও নারী অধিকারকর্মী লুযেইন আল হাথলুলের মুক্তি দিতে এক অভিনব প্রস্তাব দিয়েছে সৌদি প্রশাসন। ওই নারী অধিকারকর্মীর পরিবার জানিয়েছে, আটক অবস্থায় তাকে কোনো রকম নির্যাতন করা হয়নি, আদালতে এমন বক্তব্য দিলেই লুযেইন আল হাথলুলকে মুক্তি দেয়া হবে বলে তাদের সৌদি প্রশাসন প্রস্তাব দিয়েছে। একারণে, যৌন নির্যাতনের কথা চেপে যাওয়ার বিনিময়ে নারী বন্দিদের মুক্তি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সৌদি প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার এক টুইটবার্তায় তার বোন লিনা আল হাথলুল বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে লিখে হয়তো ঝুঁকি নিচ্ছি। হয়তো এতে আমার বোনের ক্ষতি হবে। কিন্তু আমার পক্ষে এ ব্যাপারে কিছু না বলে আর থাকা সম্ভব হচ্ছে না। লুযেইনকে একটা প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এবং বলা হয়েছে- তাকে নির্যাতন করা হয়েছে কিনা, এ বিষয়টি তিনি যদি অস্বীকার করেন, তবে তাকে মুক্তি দেয়া হবে।’
লিনা আল হাথলুল এক টুইটবার্তায় তার বোনকে দেয়া সরকারি প্রস্তাব সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরে আরো লিখেছেন, ‘আবারও বলছি- লুযেইনকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। তার পরিবার এর আগেও শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছে, যা সৌদি সরকার প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
এদিকে লুযেইনের আরেক বোন এলিনা কর্তৃপক্ষের দাবিগুলো মেনে নিতে তার প্রতি আহবান জানিয়েছেন। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘চুক্তিটা মেনে নাও এবং যা ঘটেছিল তা অস্বীকার কর- এমনকি তোমার কথার অডিও ও ভিডিওতে রেকর্ড করা হলেও। তোমাকে কাছে পাওয়াটাই আমাদের কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ।’
প্রসঙ্গত, সৌদির রাষ্ট্রবিরোধী অপশক্তির সঙ্গে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে চলতি বছরের মার্চে অধিকারকর্মী লুযেইন আল হাথলুলকে আরও ৯ অধিকার কর্মীসহ আটক করা হয়। হাথলুল সৌদি আরবে নারী অধিকার বিষয়ে পরিচিত একটি মুখ। ২০১৪ সালে তিনি প্রথম পরিচিতি পান। সেই সময়ে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সীমান্ত দিয়ে তিনি গাড়ি চালিয়ে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। সৌদি আরবে নারীদের গাড়ি চালানোর অধিকার আদায়ে লুযেইন আল হাথলুলের সক্রিয় ভূমিকা ছিল।
Discussion about this post