বিডি ল নিউজঃ
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এ্যাডভোকেট সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘আগামীতে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন দেওয়া হোক।’ রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে সোমবার দুপুরে এক স্মরণ সভায় তিনি এ কথা বলেন। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাকের স্মরণে ও চলমান রাজনীতি নিয়ে ওই সভার আয়োজন করে নৌকা সমর্থক গোষ্ঠী।
ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে সম্প্রতি রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এক আলোচনা সভার উল্লেখ করেন সুরঞ্জিত বলেন, ‘ওই সভায় দেখলাম ড. কামাল এক ধাপ পিছিয়ে এসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি না করে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের দাবি জানালেন। আমিও তার সঙ্গে একমত।’
তিনি বলেন, ‘আমি বলতে চাই, নির্বাচন কমিশন নয়, শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন নয়, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন দেওয়া হোক। সেই নির্বাচনে জনগণ যাকে রায় দেবে সেই ক্ষমতায় আসবে।’
ব্র্যাক সেন্টারের আলোচনা সভার কথা উল্লেখ করে সুরঞ্জিত বলেন, ‘ওই সভায় বলা হল, অর্থনৈতিভাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে পিছপা। অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে গেলে, রাজনৈতিকভাবে পিছপা থাকে কিভাবে। কথা হল বিড়াল কালো না সাদা সেটা ব্যাপার না। বিড়াল ইদুর ধরে কিনা সেটাই ব্যাপার।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচন চান, অবশ্যাই নির্বাচন হবে। আপনার দাবিতে অকুণ্ঠ চিত্তে আমিও সমর্থন করলাম। আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরই নির্বাচন দেওয়া হবে। কেবল মাত্র প্রধানমন্ত্রীত্বের রাজনীতি শেখ হাসিনা করেন না, তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা।’
বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করার আহ্বান জানান সুরঞ্জিত। জামায়াত যুদ্ধাপরাধীর সঙ্গ ত্যাগ করারও পরামর্শ দেন তিনি। সেই সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াতকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সহায়তাও করতে বলেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।
বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র আছে, আপনারা যদি আন্দোলন করতে চান তবে সে আন্দোলন সহিংস হতে পারবে না। সে আন্দোলন হতে হবে গণতান্ত্রিক।’
খালেদা জিয়া হঠাৎ করে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে সম্মেলন করেছেন উল্লেখ করে তার উদ্দেশে সুরঞ্জিত বলেন, ‘আপনি কি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। আওয়ামী লীগের নেতারা যদি ভারতে আশ্রিত হয় তবে আপনি তো পাকিস্তানে আশ্রিত।’
খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ কোনো বায়বীয় বিষয় নয়। রাজনৈতিক নেতৃত্বেই মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে। এটাই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। খালেদা জিয়া আপনি বলেছেন ইতিহাসের চালকের গতিতে কেউ থাকা উচিত না। এই যদি আপনার বোধ হয়ে থাকে ইতিহাসকে ইতিহাসের গতিতে ছেড়ে দিন।’
প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাকের প্রয়াণ সময়োচিত হয়নি উল্লেখ করে সুরঞ্জিত সেন বলেন, ‘তিনি অর্থের কারণে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্জিত হয়েছেন। তিনি দেশকে আরও দিতে পারতেন। তার শূন্যস্থান বাংলার রাজনীতিতে অপূরণীয় ক্ষতি।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর পরে আওয়ামী লীগে সব চেয়ে বড় সংগঠন রাজ্জাক ছিলেন। তিনি অসাধারণ সংগঠক, প্রগতিশীল, বুদ্ধিদীপ্ত, নিবেদিত প্রাণ নেতা ছিলেন।’
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ সেলিমের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সতিশ চন্দ্র রায়, কৃষক লীগ নেতা আব্দুল হাই কানু, সাম্যবাদী দলের নেতা হারুন চৌধুরী প্রমুখ।
Discussion about this post