একে.এম নাজিম, হাটহাজারী চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ বর্তমান আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের প্রথম একনেকের সভায় অনুমোদিত হয় চট্টগ্রাম-হাটাহাজারী মহাসড়ক সম্প্রসারণ উন্নীতকরণ প্রকল্প। চট্টগ্রাম-হাটহাজারী মহাসড়ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের মেয়াদকাল ৩ বছর নির্ধারণ করে দেয়া হলেও এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণ কাজ সমাপ্ত করা সম্ভব হয়নি। এখনো অনেক কাজ বাকী রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধিদের কোন কার্যকর ভূমিকা নেই। দৈনিক প্রায় ১৫ হাজার যানবাহন চলাচলকারী এ মহাসড়কের যাত্রীদের যেন দুর্ভোগের অন্ত নেই। চট্টগ্রাম থেকে হাটহাজারী পর্যন্ত এ ১২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে ২/৩ ঘন্টা সময় লাগে। এতে নিত্যদিন যানজট লেগেই থাকে। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভের স ার হয়েছে। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় শনিবার(৪ই এপ্রিল) এই সড়কটি কাজের উন্নয়ন দেখতে ঝটিকা সফরে আসেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এসময় তিনি সড়কের পর্যাপ্ত কাজের অগ্রগতি ও সময় সিমার মধ্যে শেষ না হওয়ায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন
নিত্যদিনে যাতায়াতকারীদের অভিযোগ, উত্তর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান ও রাঙ্গুনীয়া এবং দু’পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি সহ ২৮টি রুটের যাতায়াতকারী হাজার হাজার যাত্রী এ সড়ক দিয়ে আসা যাওয়া করে। মোগল আমল থেকেই অত্যন্ত গুরুত্ব¡পূর্ণ হিসেবে বিবেচিত এ সড়কটি স্বাধীনতার পর থেকে সম্প্রসারণের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। বার বার জোড়াতালি দিয়ে কোন রকমে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে রাখা হয়েছে। ফলে এসব এলাকায় যেন যানজট নিত্যসঙ্গী।
সওজ সূত্র জানা যায়, অক্সিজেন হতে হাটহাজারী পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়।র্ সড়কটি চার লাইন করার জন্য উভয় পাশে ১৩ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণের কথা ছিল। এর মধ্যে সাড়ে ছয় হেক্টর পড়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে। বাকি অর্ধেক পড়েছে কর্পোরেশন এলাকার বাইরে। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণের কারণে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় তা কমিয়ে ৫০ ফুট নির্ধারণ করা হয়। এ ব্যাপারে সওজ অফিস আরো জানায়, সড়কটি ৮৫ ফুট সম্প্রসারণ করতে গেলে উভয় দিকে বিশাল পরিমাণ জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। সড়কের দু’পাশে জমির পরিমাণ যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে প্রকল্পের ব্যয় ১শ’ ২৯ কোটি থেকে বেড়ে গিয়ে সাড়ে তিনশ কোটি টাকা হবে।
সম্প্রতিকালে হাটহাজারীতে ঝটিকা সফর কালে যোগাযোগ মন্ত্রী ওবাইদুল কাদের জানান, সড়কটি চারলাইনে উন্নীত করার কথা থাকলেও অর্থাভাবে সেটি চারলাইন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সড়কের উভয় পাশে যে টুকু অংশ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে আশা করি তা এ সরকারের আমলেই হবে।
অক্সিজেন থেকে হাটহাজারী পর্যন্ত সড়ক সম্প্রসারণ কাজ শুরু হলেও বিভিন্ন স্থানে এখনো পর্যন্ত কাজের হাত লাগেনী । তবে ইতিমধ্যে কিছু কিছু স্থানে সড়কের বিটুমিন কাজ শেষ হয়েছে। ঐসব স্থানে বিভিন্ন গাড়ী পার্কিংয়ের কারণে সড়কে তিব্র যানযট দেখা দেয়।তবে এখনো বলা যাচ্ছে না এ কাজ কখন শেষ হবে। তবে অতিরিক্ত সময় দেওয়ার পরও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এম এম বিল্ডার্স নির্ধারিত সময়ে সম্প্রসারণ কাজ শেষ করতে পারেনি। তাদের গাফেলতির কারণে কাজের কোন অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। এভাবে ধীরগতিতে কাজ করলে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। তাই কার্যাদেশ বাতিল করলেন ওবাইদুল কাদের।
উল্লেখ্য যে, মোট ১২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়ে ২০১০ সালের নভেম্বর শুরু হয় এই সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ। ২০১০ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটির কাজ শেষের সময় নির্ধারণ হয় ২০১৩ সালের ডিসেম্বর। পরে বাড়িয়ে তা ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।
Discussion about this post