ডেস্ক রিপোর্ট: নেপালে ইউএস-বাংলা উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় সারা দেশে এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান জানান, সারা দেশে একদিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। সারা দেশে সব সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে এদিন জাতীয় পাতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
এছাড়া শুক্রবার মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে দোয়া এবং প্রার্থনা কর্মসূচি পালনেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভবিষ্যতে এ জাতীয় বিমান দুর্ঘটনা এড়াতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও এয়ারলাইন্স অপারেটরদের যথাযথভাবে আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহনবিষয়ক নিরাপত্তা আইন অনুসরণ করার কথা বলেন তিনি।
এর আগে বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
সোমবার নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হলে ওই ফ্লাইটে থাকা ৩৬ বাংলাদেশির মধ্যে চার ক্রুসহ ২৬ জন নিহত হন। বাকি ১০ জন গুরুতর আহত হয়ে কাঠমান্ডুর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। দুর্ঘটনায় ৭১ আরোহীর মধ্যে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২১ জন। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় এত তাজাপ্রাণ অকালে ঝরে পড়ায় শোকে স্তব্ধ বাংলাদেশ। শোকাহত জাতিসংঘের মহাসচিবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা। টুইট ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শোকবার্তা পাঠিয়ে দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন তারা।
নিহতদের গ্রামের বাড়ি ও কর্মস্থলগুলোয় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শোক কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে নিহতদের কর্মস্থল ও এলাকায়। স্বজন ও সহকর্মীদের দেয়া ফেসবুক স্ট্যাটাস, শেষ ছবি এবং মুঠোফোনে স্বজন, সহকর্মী ও বন্ধুদের সঙ্গে শেষ কথা বা দেখা হওয়ার কথা উঠে এসেছে।
এদিকে দুর্ঘটনার কথা শুনে সিঙ্গাপুর সফর সংক্ষিপ্ত করে একদিন আগেই মঙ্গলবার দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফিরেই তিনি নিহত ও আহতদের পরিবার-পরিজনের খোঁজখবর এবং সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। বুধবার এক জরুরি বৈঠকের পর একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে দোয়া ও প্রার্থনার কর্মসূচিও ঘোষণা করেছেন।
বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, তিন বাহিনীর প্রধান, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post