আজ বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়রুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি জাগোনিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
একইসঙ্গে আদালত এই মামলায় আব্দুর রহমানসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠনের শুনানির জন্য আগামী ৩০ নভেম্বর দিন ঠিক করেছেন ট্রাইব্যুনাল। ছয় আসামির মধ্যে কারাগারে আছেন আব্দুর রহমান। বাকি পাঁচজন পলাতক।
আসামিরা হলেন- শেখ মো. আব্দুল মজিদ ওরফে মজিদ মওলানা (৬৬), মো. আব্দুল খালেক তালুকদার(৬৭), মো. কবির খান (৭০), আব্দুর রহমান(৭০), আব্দুস সালাম বেগ (৬৮) ও নুরউদ্দিন ওরফে রদ্দিন(৭০)।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি। অপরদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন গাজী এমএইচ তামিম।
গত বছরের ১২ আগস্ট গ্রেফতার করা হয় আব্দুর রহমানকে। কিন্তু বাকি পাঁচজনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। এর আগে গত ২২ মে ছয় জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন।
গত ১৬ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুন্ঠণ, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আটজন নিরীহ মানুষকে অপহরণের পর হত্যা, তিনটি বাড়ির মালামাল লুট, আটটি ঘরে অগ্নিসংযোগ ও একজনকে ধর্ষণের অভিযোগ।
২০১৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত মোট এক বছর এক মাস ৫ দিনে আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করেন মামলার (আইও) তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহান কবির।
১৯৭১ সালের ২১ আগস্ট দুপুর ১টায় রাজাকার বাহিনী নিয়ে বাড়হা গ্রামের আব্দুল খালেককে গুলি করে হত্যার পর কংস নদীর পানিতে মরদেহ ভাসিয়ে দেওয়ার অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা হয় ২০১৩ সালে।
শহীদ আব্দুল খালেকের ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা আ. কাদির বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে রয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি এবং রাজারবাগ পুলিশ লাইনে কর্মরত তার বড় ভাই আব্দুল হেকিম ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান করছিলেন। রাজাকাররা এ খবর জানতে পেরে তাদের বাড়িতে গিয়ে তার বড় ভাই আব্দুল খালেককে পিঠমোড়া করে বেঁধে মুক্তিযোদ্ধা ভাইদের খোঁজ খবর জানতে চান।
ভাইদের কোনো খোঁজ না দেওয়ায় রাজাকারবাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ঘরে লুটপাট করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। পরে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে ভাই খালেককে ধরে নিয়ে গিয়ে জারিয়া রাজাকার ক্যাম্পে দুই দিন আটক রেখে অমানবিক নির্যাতন চালায়।
পরদিন ২১ আগস্ট আব্দুল খালেককে জারিয়া কংশ নদীর পাড়ে গুলি করে হত্যা করে নদীর পানিতে মরদেহ ভাসিয়ে দেন রাজাকাররা।
Discussion about this post