মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে এই প্রথম কোনও বাঙালি পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। তবে এ অভিযোগ আমলে নেওয়া হবে কিনা সে বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ১৪ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ দিন ধার্য করেন।
সংশ্লিষ্ট মামলার প্রসিকিউটর আবুল কালাম বলেন, ‘কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার আমিরাবাদ গ্রামের পাকিস্তানি সেনবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ’র বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ এনে গতকাল (সোমবার) ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। আজ বিষয়টি ট্রাইব্যুনালে উত্থাপন করা হয়। এখন এটি আমলে নেওয়া হবে কিনা সে বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ১৪ নভেম্বর তারিখ ধার্য করে দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।’
এর আগে গত ২১ মার্চ এ ক্যাপ্টেনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
ওই সময় তদন্ত সংস্থার প্রধান আব্দুল হান্নান খান বলেছিলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত বাঙালি কোনও সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এটিই প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন। মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ না দেওয়ায় তার বিষয়ে কোনও রেকর্ড সেনাবাহিনীর কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।’
তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ সদস্য সানাউল হক বলেন, ‘গত বছরের ২৪ জুলাই এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২ আগস্ট এ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ওই দিনই কুমিল্লা জেলা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ৩ আগস্ট আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করলে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। আসামি বর্তমানে করাগারে আছেন।’
২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর এ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে তদন্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় তদন্ত সংস্থা। এতে আসামির বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলা মোট সাক্ষী ২১ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামি ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ (৭৫) মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ঢাকা সেনানিবাসে যোগ দেন। পরে ঢাকা থেকে কুমিল্লার সেনানিবাসে যোগ দিয়ে নিজ এলাকা দাউদকান্দি সদরে ক্যাম্প স্থাপন করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই এলাকাতেই আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাসহ নানা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন।
বাংলা ট্রিবিউন
Discussion about this post