তুচ্ছ ঘটনায় রাজধানীতে খুন হয়েছে ইরফান (১৬) নামের এক কিশোর। আর তাকে খুন করেছে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া আরেক কিশোর রফিকুল ইসলাম রাজন (১৬)। রোববার সকালের ঘটনা এটি।
আটদিন আগের একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পশ্চিম ধানমন্ডির নিরিবিলি হাউজিং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের কিছুক্ষণ পরই রাজনকে আটক করে হাজারীবাগ থানা পুলিশ।
এরপর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মুখোমুখি করা হয় রাজনকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, আটদিন আগে মোহাম্মদপুরের আল্লাহ্ করিম মসজিদের সামনের একটি দোকানে গেঞ্জি কিনতে যায় ইরফান। সঙ্গে ছিল তার দুই বন্ধু। সেখানে ঘোরাফেরা করছিল রাজন। এ সময় ‘ভুলবশত’ ইরফানের পায়ে পাড়া লাগে রাজনের। সঙ্গে সঙ্গে ক্ষিপ্ত হয় ইরফান। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সে ও তার বন্ধুরা রাজনকে মারধর করে। সেই ঘটনার জের ধরে প্রতিশোধ নিতে রোববার সকালে ইরফানের বাসার বাইরে হাতাহাতি হয় তাদের। হাতাহাতির একপর্যায়ে ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে ইরফানকে আঘাত করে রাজন।
আটকের পর থানায় আসে রাজনের পরিবার। নিজের ছেলের বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেন বাবা-মা। তারা পুলিশকে জানান, রাজন নেশাগ্রস্ত। ঠিকমতো পড়াশোনা করে না। বাবা-মা’র কথাও শোনে না।
ধানমন্ডির শংকরের সমতা নামের একটি স্কুলের শিক্ষার্থী রাজন। বাড়ি মাদারীপুরের কালাপাড়া এলাকায়। তার বাবা আজহার ভূঁইয়া রিকশাচালক। মা ঢাকার একটি স্কুলে আয়ার কাজ করেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে রাজন ধানমন্ডি এলাকায় বসবাস করত।
নিহত ইরফান ফ্রিজ ও এসি মেরামতের দোকানে তার দুলাভাইয়ের সহকারী হিসেবে কাজ করত। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায়।
জিজ্ঞাসাবাদে রাজন দাবি করে, সে ইরফানকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরি নিয়ে যায়নি। রোববার সকালে বাড়ির পাশে একটি চাকু পড়ে থাকতে দেখে সেটি ব্যাগে তুলে নেয়। ইরফানের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দেখে দু’জনের মধ্যে সেদিনের ঘটনা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে চাকু দিয়ে সে আঘাত করে।
তবে ভিন্ন কথা বলছেন ইরফানের পরিবার। ইরফানের দুলাভাই আমীর হোসেন মিলন গণমাধ্যমকে বলেন, ইরফান তার সঙ্গে থেকে কাজ শিখত। সকালে বাসা থেকে দোকানে আসার সময় রাজন তার (ইরফানের) মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ইরফান প্রতিবাদ করলে তাকে চাকু মারে। ঘটনাস্থলেই ইরফানের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ফৌজদারি কার্যবিধি ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা দায়ের করবেন ইরফানের দুলাভাই।
পুলিশের ধানমন্ডি জোনের সহকারী কমিশনার আবদুল্লাহ হেল কাফী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড। হত্যার সঙ্গে জড়িত কিশোরকে আটক করা হয়েছে। কিশোর আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
-জাগো নিউজ
Discussion about this post