পা দিয়ে লিখে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা দিচ্ছে চান মিয়া। সে ঘাটাইল প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের ছাত্র। উপজেলা সদরের ঘাটাইল সরকারি আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছে।
চান মিয়ার বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার গারট্র গ্রামে। বিকলাঙ্গ হাত নিয়েই তার জন্ম হয়। প্রতিবন্ধী হলেও সন্তানের প্রতি যত্নের কোনও কমতি ছিল না মা রত্না বেগমের। প্রতিদিন ১২ কিলোমিটার দূর থেকে সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যেতেন তিনি।
মা রত্না বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের জন্য এই পৃথিবীতে কিছু একটা করে যেতে চাই। তাকে আমি কোনোদিন প্রতিবন্ধী হিসেবে দেখিনি। অন্য আর দশটা ছেলের মতোই ভাবি। ছেলেকে শিক্ষিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে আমার চেয়ে তার বাবার উৎসাহ অনেক বেশি। বিদেশ থেকে প্রতিনিয়ত ফোন করে ছেলের খোঁজ নেন।’
ঘাটাইল প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রফিকুল বারী খান বলেন, ‘আমার শ্রম প্রতিবন্ধীদের নিয়ে করা সংগ্রাম আজ স্বার্থক। এ বছরই প্রথম দুইজন শ্রবণ, একজন শারিরীক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী পিএসসি পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। অন্য তিনজনের চেয়ে চান মিয়া নিয়মিত স্কুলে আসত এবং সে অনেক মেধাবী।’
ঘাটাইল আর্দশ প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুবি খান বলেন, ‘আমরা জানতাম না সে প্রতিবন্ধী। আজ সে বেঞ্চ জোড়া করে পরীক্ষা দিয়েছে। আগামীকাল তার জন্য মেঝেতে মাদুরের ব্যবস্থা করা হবে।’
ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মোহাম্মদ শাহীন পরীক্ষা পরিদর্শন করতে গিয়ে বলেন, ‘চান মিয়ার পরীক্ষা নির্বিঘ্ন করতে পৃথক কক্ষের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
Discussion about this post