বিডি ল নিউজঃ
পুরস্কারের লোভে নিরপরাধ ছাত্রদের পিটিয়ে পুলিশে দিচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নিরীহ ছাত্রদের লোহার পাইপ, স্ট্যাম্প ও লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেয়ার চেষ্টা করছেন তারা। হাতেনাতে ধরতে না পারলেও কাউকে রুম থেকে, কাউকে পরীক্ষার হল থেকে ধরে নিয়ে এ নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গল ও বুধবার রাতে তিন ছাত্রকে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে লোহার পাইপ, স্ট্যাম্প ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা হলেন অজিত চন্দ্র
নন্দ, খালিদ হাসান মিথুন ও আতিকুজ্জামান আতিক। মারধরের পর তাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের পুলিশি হেফাজতে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসাপাতলে পাঠিয়ে দেয়। এসব ঘটনায় নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করেছেন তারা। যদিও আহতরা এক সময় ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানা গেছে।
অনুসন্ধনে দেখা দেখা গেছে, অপরাধীকে ধরিয়ে দিলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক পুরস্কার ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পুরস্কার পাওয়ার লোভে কয়েক ছাত্রলীগ নেতা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এদিকে প্রক্টর ও প্রক্টোরিয়াল বডির পদত্যাগসহ চার দফা দাবিতে টানা
চার দিনের ধর্মঘটের ডাক দেয় শাখা ছাত্রদল। দাবি আদায়ে প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় তারা। এক মাসে কমপক্ষে ১০টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। যদিও অনুষ্ঠানিকভাবে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা অস্বীকার করেছেন ছাত্রদল নেতারা। শাখা ছাত্রদলের সভাপতি জাকিরুল ইসলাম জাকির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করতে ছাত্রলীগের নেতারা এ ঘটনা ঘটাচ্ছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারী
ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার না করা হলে শনিবার থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদুর রহমান জনি বলেন, এসব ঘটনায় যারা জড়িত শুধু তাদেরকেই পুলিশে দেয়া হচ্ছে। অন্য কাউকে দেয়া হচ্ছে না। আর মারধরের বিষয়টি আমার জানা নেই।
শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান বলেন, একজন ছাত্রকে সন্দেহ করে মারধর করা খুবই দুঃখজনক। যদি সে জড়িতও থাকে তাহলে তো দেশে আইন আছে। সেখানে তার বিচার হবে। কিন্তু এভাবে মারধর করলে তো সঙ্কট আরও বাড়বে, কমবে না।
Discussion about this post