পিলখানার বিডিআর বিদ্রোহ মামলার (বর্তমান বিজিবি) পূর্ণাঙ্গ রায় দিতে আরো কিছুদিন সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
রোববার (২৬ নভেম্বর) হাইকোর্টে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা জানান।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় নিম্ন আদালত ১৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন।
এই রায়ের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টে আপিল করা হলে এক বছর শুনানি শেষে আদালত আজ রায় দেওয়া শুরু করেন।
মাহবুবে আলম বলেন, ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন হত্যা যেমন একটি জঘন্য ঘটনা ছিলো তেমনি এ মামলার রায়ও একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, তিনজন বিচারপতির বেঞ্চ এ মামলায় একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। তবে রায় সম্পর্কে তাদের অভজারভেশন ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।
তিনি বলেন, নিম্ন আদালতের রায়ে বিরুদ্ধে দণ্ডপ্রাপ্তদের পক্ষ থেকে ১১৯টি আপিলআবেদন করা হয়েছিলো। আর ৬৯ জন আসামির খালাস দেওয়ার বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ একটি আপিল করেছিলো। হাইকোর্টে মামলাটি এক বছরের বেশি শুনানি হয়েছে। আজকে রায় দেওয়া শুরু হয়েছে। রায়ের উপক্রমনিকা পড়েছেন বেঞ্চের বিচারপতি শওকত হোসেন, তারপর বিচারপতি জাফর সিদ্দিকী পর্যবেক্ষন পড়েছেন এবং দুপুরের পর বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার রায় পড়বেন।
মাহবুবে আলম বলেন, তারপর আগামীকাল সোমবার (২৭ নভেম্বর) মামলার পর্যবেক্ষণসহ রায়ের অন্য অংশ পড়া শুরু করবেন। সমস্ত রায় পড়া হলে বেশ কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। তবে উনারা রায়ের সবটা নাও পড়তে পারেন। পর্যবেক্ষণ পড়ে তারা হয়ত তাদের অর্ডারের অংশে চলে যাবেন। আজকে অর্ডারের অংশ পড়বেন বলে মনে হয় না।
তিনি বলেন, রায়ে ক’জন আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকবে, ক’জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল থাকবে, ক’জনের সাজা বহাল থাকবে, এবং কোন কোন আসামির দণ্ড খালাস হবে, বা মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন করা হবে, এই ব্যাপারে তিনজন বিচারপতি ঐক্যমত পৌঁছেছেন
বিচারপতি জাফর সিদ্দিকী বলেছেন, যে সমস্ত আসামিদের সাজা বহাল রাখা হবে, সাজা বহাল রাখার স্বপক্ষে তার যুক্তি ও পর্যবেক্ষণ এটা তারা দেখাবেন। যাদের সাজা মওকুফ করা হবে তাদের ব্যাপারেও তাদের যে পর্যবেক্ষ ও যুক্তি তা বিস্তারিতভাবে দেখাবেন।
রায় পড়া শেষ না হলে বুঝা যাবে না মোট কত পৃষ্ঠার রায়। একই দিনে ৭৪ জনের মৃত্যু, তার মধ্যে ৫৭ জন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা। কোনো দেশের সামরিক ক্যুতে এতো হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে আমার জানা নেই, এবং এই মামলা ১৫২ জনের ফাঁসির আদেশ। বাংলাদেশে তো সর্বোচ্চই, আমার মনে হয় না পৃথিবীর কোনো দেশে এতো সংখ্যাক লোকের দণ্ড প্রদান করা হয়েছে। অর্থাৎ অপরাধের দিক থেকেও এটা একটা বিশেষ রকম উল্লেখ করা মত ঘটনা এবং রায়ও উল্লেখ যোগ্য রায়।
Discussion about this post