প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, দেশের নারী বিচারকদের পথ প্রদর্শক হচ্ছেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা। পৃথিবীর যেকোনো দেশের চেয়ে আমাদের দেশে নারী বিচারকেরা অগ্রগামী।
আজ শনিবার (২৯ জুলাই) সুপ্রিমকোর্ট অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ মহিলা জজ এসোসিয়েশন আয়োজিত সদ্য অবসরে যাওয়া আপিল বিভাগের বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার আজীবন সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ মহিলা জজ এসোসিয়েশনের সভাপতি তানজীনা ইসমাইলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিয়া, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী, সংবর্ধিত বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে সুপ্রিমকোর্টের উভর বিভাগের বিচারপতি ও দেশের নারী বিচারকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বিচারপতি তার বক্তৃতায় সুপ্রিমকোর্টের মূল ভবনের বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে নতুন ভবন নির্মাণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বিচার বিভাগের স্বার্থে তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা বাংলাদেশের প্রথম নারী বিচারক এবং বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের প্রথম নারী বিচারপতি। এ অবস্থান তৈরি করতে তাঁকে পার করতে হয়েছে নানা প্রতিকূলতা, বাধা-বিপত্তি। তবে সবকিছু জয় করে তিনি এখন দেশ ও বিচার বিভাগের ইতিহাসের অংশ ও এদেশের বিচার বিভাগের অহংকার। তাকে অনুসরণ করে অনেক নারী এই পেশায় এসেছেন। আজ তাই দেশে ২৪ শতাংশ নারী বিচারক রয়েছেন।
আইনমন্ত্রী দেশের সবক্ষেত্রে নারীদের অগ্রযাত্রার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, সমাজকে আর পুরুষশাসিত সমাজ বলার যৌক্তিকতা নেই। তিনি বলেন, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা আলোচিত অনেক রায় প্রদানের মাধ্যমে বিচার বিভাগে সম্মানের আসন তৈরি করে নিয়েছেন। তার হাতে এখন অখন্ড অবসর। তিনি তাঁর সুদীর্ঘ ৪২ বছরের বিচারিক জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে পারেন তাঁর লিখনীর মাধ্যমে। তাঁর আলোকিত কর্মজীবন নবীন বিচারকদের বিশেষ করে নারী বিচারকদের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবে।
বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা বলেন, ‘আমি আমার বিচারিক জীবনে ন্যায়বিচার করে গেছি। কখনও ইচ্ছাকৃতভাবে কিংবা অবহেলায় ভুল বিচার করিনি।’
নারী বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিচারকের জীবন মানেই ন্যায় বিচারের দায়িত্ব কাঁধে নেয়া। আর এই দায়িত্ব পালন করা খুব কঠিন ও পরিশ্রমের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধান বিচারপতি ও আইনমন্ত্রীর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে উচ্চ আদালতে নারী বিচারপতির সংখ্যা বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
Discussion about this post