বিডি ল নিউজঃ জয় দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। শনিবার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে তারা ৯৮ রানে হারিয়েছে ১৯৯৬ সালে চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে।
এর আগে ক্রাইস্টচার্চে ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক কোরে অ্যান্ডারসনের ঝড়ো ব্যাটিং দিয়েই শুরু হয়েছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ১১তম আসরের মাঠের লড়াই। ৪৫ বলে ৭৫ রানের মারকুটে ইনিংস খেলেছেন অ্যান্ডারসন। নির্ধারিত ৫০ ওভারে যা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডকে ৩৩১ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করাতে সাহায্য করেছে। অবশ্য ম্যাচে দলকে দুরন্ত সূচনাই এনে দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের ওপেনাররা। শতরানের জুটি গড়েছেন দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও অধিনায়ক ব্র্যান্ডন ম্যাককুলাম। এই দুই ব্যাটসম্যান ১১১ রানের জুটি গড়েছেন। লঙ্কান বোলারদের বেধড়ক পিটিয়ে ১৫.৫ ওভারে নিউজিল্যান্ডের প্রথম উইকেট হিসেবে আউট হয়েছেন অধিনায়ক ম্যাককুলাম। রঙ্গনা হেরাথের বলে আউট হওয়ার আগে তিনি করেছেন ৪৯ বলে ৬৫ রান। অপর ওপেনার গাপটিল ৬২ বলে ৪৯ রান করেছেন। এ ছাড়া কেইন উইলিয়ামসন ৬৫ বলে ৫৭ রান করেছেন। শেষ অবধি তাই ৬ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কাকে ৩৩২ রানের বড় টার্গেট ছুঁড়ে দিতে পেরেছে স্বাগতিক দলটি। শ্রীলঙ্কার পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন সুরঙ্গা লাকমল ও জীবন মেন্ডিস। এ ছাড়া ১টি করে উইকেট নিয়েছেন রঙ্গনা হেরাথ ও নুয়ান কুলাসেকারা।
জবাবে খেলতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল শ্রীলঙ্কা। শেষ অবধি তা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি তারা। পারেনি পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করতে দলটি। ৪৬.১ ওভারে ২৩৩ রান তুলেই গুটিয়ে গেছে গত আসরের ফাইনালিস্টরা। লাহিরু থিরিমান্নে ৬৫, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ৪৬ ও কুমার সাঙ্গাকারা ৩৯ রান করেছেন। বাকি ব্যাটসম্যানরা বড় স্কোর গড়তে পারেননি।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক ড্যানিয়েল ভেট্টরি, পেসার ট্রেন্ট বোল্ট, কোরে অ্যান্ডারসন ও অ্যাডাম মিলন।
আবার, বিশ্বকাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ড এর আগে হেরেছে চার ম্যাচ। রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় হার ছিল মাত্র ৭ রানে। কিন্তু পেছনের রেকর্ডকে আজ বিরাট ব্যবধানেই ছাড়িয়ে গেল ইংলিশরা। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে এমসিজিতে একেপেশে ম্যাচে ১১১ রানে হারল ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপে এটি তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বড় ব্যবধানে পরাজয়।
অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৩৪৩ রানের পাহাড় তাড়া করতে গিয়ে শুরুতেই ভড়কে গেল ইংলিশরা। দুই মিচেল—মার্শ ও স্টার্কের তোপে খাবি খেতে লাগল টপ-অর্ডার। ২১.২ ওভারে ৯২ রান তুলতেই সাজঘরের পথ ধরলেন ছয় ব্যাটসম্যান! এ ছয়টির পাঁচটিই আবার জিওফ মার্শের ছোট ছেলের দখলে! অবশ্য ১০ রান করা মঈন অালীকে ফিরিয়ে ‘ধ্বংসযজ্ঞে’র গোড়াপত্তনটা করেছিলেন স্টার্কই। এরপর সপ্তম উইকেটে ক্রিস ওকস-জেমস টেলরের কিছুটা প্রতিরোধ। এ জুটিতে আসে ৯২ রান। দুই মিচেল যদি ইংলিশদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার কাজটা শুরু করেন, সেটি শেষ করেন আরেক ‘মিচেল’—জনসন। ৩৭ রান করা ওকসকে ফিরিয়ে ইংলিশদের প্রতিরোধটুকুও ভেঙে দেন। সতীর্থদের অসহায় আত্মসমর্পণের মধ্যেই এক প্রান্তে আগলে ছিলেন টেলর। ৯৮ রানে অদ্ভুত এক রানআউট তাঁকে সেঞ্চুরি বঞ্চিত করে। যদিও সেই রানআউট নিয়ে নিশ্চয়ই প্রশ্ন তুলবে ইংলিশ সংবাদমাধ্যম।
ইংলিশদের ইনিংস থামে ৪১.৫ ওভারে ২৩১ রানে। অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডারদের হাত পিচ্ছিল না হলে ইংলিশদের লজ্জাটা আরও বড়ই হতো!
পরের ইনিংসটা যদি ‘মিচেলময়’ তবে আগেরটি নিঃসন্দেহে ‘ফিন’ময়। একজন ফিন, অন্যজন ফিঞ্চ। প্রথম ইংলিশ পেসার হিসেবে বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়েছেন স্টিভেন ফিন। অন্যদিকে প্রথম বিশ্বকাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করলেন অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যাটসম্যান। ফিঞ্চের সেঞ্চুরিতে প্রথমে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ৩৪২। রানআউটে কাটা পড়ার আগে ফিঞ্চের সংগ্রহ ১৩৫ রান। এ ছাড়া ফিফটি পেয়েছেন জর্জ বেইলি (৫৫) ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (৬৬)। ইংলিশদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫ উইকেট ফিনের।
সূত্রঃ দ্য রিপোর্ট, প্রথম আলো
Discussion about this post