‘ইউনিফর্ম না পরে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তারের ঘটনা ভয়াবহ’-বলে মন্তব্য করায় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস।
বৃহস্পতিবার (১৯ মে) বাদ জোহর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতিকে এ ধন্যবাদ জানান তিনি।
নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক আজিজ উল্লাহের রুহের মাগফেরাত কামনায় এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের একগুচ্ছ নির্দেশনার বিরুদ্ধে সরকারের করা আপিলের ওপর শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, ‘ইউনিফর্ম না পরে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তারের ঘটনা ভয়াবহ। কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় থাকতে হবে।’
শুনানির এক পর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট রায়ে সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা দিয়েছিল। ১৩ বছর পার হয়ে গেলেও আপনারা (সরকার) একটি নির্দেশনাও প্রতিপালন করেননি।’
এস কে সিনহা আরো বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধি একটি কলোনিয়াল আইন। ১৯৭০ সালে মালয়েশিয়া এই আইনের সংশোধনী এনেছে। মালয়েশিয়াকে অনুসরণ করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতও তাদের ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করেছে। কিন্তু আমরা এখনো এটি করতে পারছি না।’
দোয়া মাহফিলে প্রধান বিচারপতির ওই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা জাতির সামনে বাস্তব কথা তুলে ধরেছেন। এ জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। বিএনপির নেতা হিসেবে নয়, একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে তাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘পিন্টু জেলখানায় মৃত্যুবরণ করেছেন, এটি বললে সঠিক বলা হবে না। জেলখানায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমসহ বিএনপির অসংখ্য নেতাকে গুম করা হয়েছে, অনেককে হত্যা করা হয়েছে। অনেককে এখনো খুঁজে পায়নি তাদের স্বজনরা। এভাবে একটি রাষ্ট্র চলতে পারে না।’
সরকারের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘যাদেরকে গুম করা হয়েছে, হয় তাদের ফেরত দেবেন নয়তো বা তাদের খুঁজে বের করবেন।’
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা শেষে আজিজ উল্লাহের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আব্দুল মালেক।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের ভুইয়া, নগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক কাজী আবুল বাশার, তাঁতি দলের সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, স্বেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ-সভাপতি কফিল উদ্দিন ভুইয়া ও ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।
Discussion about this post