পুলিশের বাধায় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সঙ্গে দেখা করতে তার বাসায় যেতে পারেননি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বিএনপি সমর্থক নেতারা।
শুক্রবার বিকেলে আইনজীবী সমিতির নেতারা দুটি গাড়িতে করে সুপ্রিম কোর্ট থেকে প্রধান বিচারপতির হেয়ার রোডের বাসভবনের উদ্দেশ্যে রওনা হলেও মৎস্য ভবন মোড়ে পুলিশ তাদের গাড়ি আটকে দেয়।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন খোকন গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশ তাদের গাড়ি থামিয়ে নামিয়ে দিয়েছে।
“প্রধান বিচারপতির খোঁজ নিতে তার বাসভবনে যাচ্ছি- এটা জানানোর পর পুলিশ আমাদের বলেছে, দেখা করা যাবে না। পরে আমরা সুপ্রিম কোর্টে ফিরে আসি।”
পুলিশের বাধার এ ঘটনায় শনিবার বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলে জানান খোকন।
আইনজীবী সমিতির একজন নেতা জানান, বারের ভাইস প্রেসিডেন্ট উম্মে কুলসুম রেখা, সদস্য আয়েশা আক্তারসহ চার-পাঁচজন বিকাল ৫টার আগে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে যান।
আর আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীনের নেতৃত্বে সমিতির অন্য সদস্যরা বিকাল ৫টার কিছু আগে সুপ্রিম কোর্ট থেকে রওনা হন।
বিএনপি অভিযোগ তুলেছে, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের কারণে চাপ দিয়ে প্রধান বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠিয়েছে সরকার। অন্যদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এই ছুটির সঙ্গে রায়ের কোনো সম্পর্ক নেই, চাপেরও কোনো বিষয় নেই।
বিচারপতি সিনহা অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এক মাসের ছুটিতে যাওয়ার পর গত ২ অক্টোবরও তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নেতারা।
কিন্তু ঢুকতে না পারায় বৃহস্পতিবার তারা ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার কাছে যান এবং প্রধান বিচারপতির অবস্থান জানতে চান।
পরে সমিতির নেতারা সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা তাদের জানিয়েছেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও বলেছিলেন, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে কাউকে বাধা দেবে না সরকার। তবে প্রধান বিচারপতি নিজে কারও সঙ্গে দেখা করতে না চাইলে সেটা তার নিজস্ব ব্যাপার।
আনিসুল হক বুধবার সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং পরে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বাসায় যান।
প্রধান বিচারপতি সিনহা ‘গৃহবন্দি’ অবস্থায় আছেন বলে বিএনপি অভিযোগ করলেও বুধবার বিকালে আকস্মিকভাবে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যান বিচারপতি সিনহা।
শুক্রবার সকালে দুই দফায় হেয়ার রোডে গিয়ে বিচারপতি সিনহার সঙ্গে সাক্ষাত করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভীও বেলা ১১টার দিকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে গিয়ে ঘণ্টাখানেক কাটিয়ে এসেছেন বলে খবর এসেছে, যদিও কোনো কর্মকর্তা এ বিষয়ে মুখ খোলেননি।
প্রধান বিচারপতির বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসে গিয়েছিলেন এবং তিনি বিদেশে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় আছেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন।
আইনমন্ত্রী বৃহস্পতিবার এ প্রশ্নে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “আমিও জিজ্ঞেস করিনি, উনিও এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।”
Discussion about this post