শিশুসন্তান ও স্বামীর জীবনের নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে সহযোগিতা কামনা করেছেন গণধর্ষণের শিকার এক নারী শ্রমিক। শুধু তাই নয় সংসার বাঁচাতে না পারলে আত্মহত্যারও হুমকি দিয়েছেন তিনি।
বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের হানিফ খান মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই নারী শ্রমিক।
সংবাদ সম্মেলনে ওই নারী বলেন,‘বিগত ২০০৭ সালের ২৯ মে সন্ধ্যা ৭টায় গার্মেন্টস থেকে বাসায় যাওয়ার সময় সাত ব্যক্তি তাকে জোর করে তুলে নিয়ে ফতুল্লার ইসদাইর ফজল মিয়ার বাসায় নিয়ে গণধর্ষণ করে।
ওই সাত আসামি হলেন- ফতুল্লার ইসদাইর এলাকার ফজল মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া এরশাদ, ফারুক, সাইফুল, আবুল হোসেন, মিন্টু, মানিক ও কাতু ওরফে মুনসুর আলী।
তিনি বলেন, এদের মধ্যে ধর্ষক আবুল হোসেনের মাসদাইর এলাকায় দোকান ছিলো। এছাড়া ধর্ষকদের বাড়ি গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। তারা সকলেই ফজল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতো। ওই ঘটনার পরে র্যাব আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে ও তিন আসামিকে গ্রেফতার করে। পরে আমি ফতুল্লার ইসদাইর এলাকা থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায় চলে আসি।
কিন্তু আসামিরা জামিনে বেরিয়ে এসে ধর্ষণ মামলা তুলে নিতে একের পর এক হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তারা সিদ্ধিরগঞ্জের প্রভাবশালী লোকদের ম্যানেজ করে আমাকে গার্মেন্টসে চাকরি করতে দিচ্ছে না। গত জুন মাস পর্যন্ত আদমজী ইপিজেডের অনন্ত গার্মেন্টে চাকুরি করলেও ওরা আমাকে ওই গার্মেন্ট থেকে বেতন ছাড়া বের করে দেয়। আমাকে মারধরও করে। আমার ও আমার স্বামীর ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে গেছে। আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমার স্বামীকে একদিন জেলে আটকেও রেখেছে। এত কিছু করেও ওরা থামেনি। এখন আমাদের মারার জন্য আমাদের পরিবারের লোকজনকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। আমাদের পেলে মেরে ফেলবে বলেও হুমকি দিচ্ছে। ধর্ষকদের হুমকি-ধমকিতে এখন আমার স্বামীও আমাকে ছেড়ে দিতে চাইছে।
ওই নারী আরও বলেন, গণধর্ষণ মামলাটি বর্তমানে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে। আমিসহ ছয়জন সাক্ষীর মধ্যে আমার ও অপর একজনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। চিকিৎসকসহ আরও চারজনের সাক্ষী বাকি রয়েছে। কিন্তু আসামিরা জামিনে থাকায় আমাদেরকে হুমকি-ধমকিসহ সাক্ষীদেরকেও নানাভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। এতে করে আমি ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি।
Discussion about this post