স্পেনের ‘এল পাইস’ (El País) পত্রিকাকে দেওয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত জ্যোতি-পদার্থবিদ অধ্যাপক স্টিফেন হকিং বলেন, ‘‘গ্রহান্তরের প্রাণিরা যদি পৃথিবী-ভ্রমণে চলেই আসে তাহলে এর ফলটা হবে কলম্বাস আমেরিকা মহাদেশে পা রাখার পর যেমনটা হয়েছিল অনেকটা তেমনই। আমেরিকার আদি বাসিন্দাদের জন্য তা শুভ পরিণাম বয়ে আনেনি।ভিনগ্রহের এ-ধরণের অগ্রসর প্রাণিরা হয়তোবা সদা ভ্রমণশীল স্বভাব যাবাবর। যে-গ্রহেই এরা পৌঁছতে সক্ষম হবে, সে-গ্রহকেই পদানত করে ফেলবে আর সেখানে তাদের কলোনি বা উপনিবেশ কায়েম করার জন্য তক্কে তক্কে থাকবে।’’
আর গ্রহান্তরে যে আমাদের চেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণি রয়েছে সে-ব্যাপারে তাঁর মনে বিন্দুমাত্র সংশয় নেই। তাঁর নিজের ভাষায়,: ‘‘ আমার গাণিতিক মন বলছে, কেবল সংখ্যার বিষয়টি যদি মাথায় রাখি তাহলে গ্রহান্তরের প্রাণির অস্তিত্ব রয়েছে মর্মে চিন্তাটা পুরোপুরি যৌক্তিক। আসল চ্যালেঞ্জটা হলো গিয়ে গ্রহান্তরের প্রাণিরা কেমন হবে সেটা খুঁজে বের করা।’’
তাঁর মতে, মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার সবচে বড় সুযোগ বা উপায় হতে পারে পৃথিবীর বাইরের কোনো গ্রহে গিয়ে আবাস গড়া। কেননা, ‘‘কোনো একটা বিপর্যয় পৃথিবীকে ধ্বংস করে দেবে– এমনই এক ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির মধ্যে আছি আমরা। সুতরাং আমি মহাকাশভ্রমণের (space flight) গুরুত্ব সম্পর্কে সবার মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে চাই। অনেক দূরবর্তী কালে কি হবে সে ব্যাপারে মাথা না ঘামিয়ে, বর্তমানের ওপর মনোনিবেশ করবার শিক্ষাই আমি পেয়েছি। আমি অনেক-অনেক কিছু করে যেতে চাই।’’
অধ্যাপক হকিংয়ের বয়স এখন ৭৩ বছর। রয়্যাল সোসাইটি অব লন্ডনে একবার তিনি বলেছিলেন, ‘‘ ব্রহ্মাণ্ডের কোথাও না কোথাও থেকে বুদ্ধিমান প্রাণিরা সম্ভবত আমাদের গ্রহের আলো অবলোকন করে যাচ্ছে। তারা এর অর্থ জানে।’’
Discussion about this post