বিডি ল নিউজঃ গত বর্ষা থেকে এই বর্ষা- মাওনা চৌরাস্তা হতে ফুলবাড়িয়া মূল সড়ক ও এর বেশিরভাগ শাখা সড়কগুলোর ব্যপারে এমন কোন পত্রিকার মতামতের ও চিঠিপত্র কলাম নেই যেখানে এই রাস্তাটির দুর্দশার কথা আসেনি । সংবাদকর্মীরা অন্তত সপ্তাহে একবার হলেও এ রাস্তার বিষয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লিখেছেন ।কিন্তু ফলাফল ? একোবারেই হতাশার বলতে হবে এই চিত্র থেকে । মানুষগুলো অসহায়ের মত করে কান্না করেছে কখনও কখনও কারণ ইচ্ছে করলেই রোগাক্রান্ত মানুষকে এ রাস্তা দিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়না । এতটাই এব্রোথেব্র এই রাস্তাটি কেউ যদি রিকশায় না উঠে যাতায়াত করে তবে বুঝতে পারা যাবেনা ।
আজ মানুষগুলো আর ঘরে বসে থাকতে পারলোনা । এমনিতেই এ এলাকার মানুষগুলো খুব বেশী সহ্য করে অভ্যস্থ হলেও আজকে সকালে মানব বন্ধনে তাদের উপস্থিতিতে বোঝা গেছে খুব বেশী অসহ্য অবস্থাই বিরাজ করছে এ রাস্তায় ।প্রেসক্লাবের সভাপতিও বেশীরভাগ জাতীয় পত্রিকার সংবাদকর্মী, ব্যবসায়িক সমিতির সভাপতি সহ সকল সদস্য, রাজনৈতিক বিভিন্ন নেতা নেত্রী, ছাত্র সমাজ ও সাধারণ মানুষের ব্যপক উপস্থিতিতে বোঝা যায় মানুষ চায় এ দুর্দশা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে ।
তবে দুঃখ বা আক্ষেপের চেয়েও মন খারাপের বিষয় হল এটা এত বলার পরও কেন রাস্তার কাজ সঠিকভাবে ধরা হচ্ছে না । প্রায় প্রতিদিনই এ রাস্তায় স্কুল পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীরা কোন না কোন জায়গায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েই । বৃষ্টি হলে কোন কোন জায়গায় হাঁটুর উপর পর্যন্ত পানি জমে যায় তখন ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাদের যাতায়াত কতটা কষ্টের হয় তা কি অনুভব করা সম্ভব ?
কোমল মতি শিশুরা আজ মানব বন্ধনে দাঁড়িয়ে । তীব্র রোদ উপেক্ষা করে স্কুল ড্রেসে রাস্তা সংস্কারের জন্য মানব বন্ধন করতে দেখলে কোন শিশুকে তা শুধু দৃষ্টি কটুই দেখায় খুব ভাবনার ব্যপারও হয়ে দাঁড়ায় !
আমরা দিন দিনই সভ্য হচ্ছি । অনেক ক্ষেত্রেই দেখি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে হস্তক্ষেপ করে সমস্যার সমাধান করে দেন । দেশের প্রতিটি কোণায় কোণায় সরকার অনেক কর্মচারী কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে রেখেছেন সমস্যা গুলো সমাধান করার জন্য ।কোন সমস্যা হলে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীরাই দেখভাল করে তা সমাধান করবেন এটাই স্বাভাবিক কিন্তু সে সমস্যার জন্য একেবারে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী পর্যন্ত যাওয়ার বিষয়টি আমাদের কাছে সমিচীন কখনই মনে হয় না ।
একটি এলাকার রাস্তা নষ্ট হয়েছে । তার জন্য প্রথমে তারা ঐ এলাকার রাস্তা যারা দেখভাল করে তাদের কাছে গিয়েছে, পত্রিকায় মতামত এসেছে এ ব্যপারে, টিভিতে প্রতিবেদন হয়েছে তারপর সংবাদ কর্মীরা ধারাবাহিতভাবে সংবাদ কাভার করেছে ! আশ্চর্যজনক হলেও সত্য তারপরও আশানুরুপ কিছুই হয়নি ।
তারমানে কি রাস্তা মেরামত এবং পূণরায় করার ব্যপারে কোন ধরণের আশার কথা তারা শোনাতে পারেননি নাকি কোন অমনোযোগীতা নিয়েই ছিলেন তারা ? এ সরকারের আমলে দেশের উন্নয়ন বাংলাদেশকে যে স্থানে নিয়ে গেছে সে উন্নয়ন যেমণ অন্য দেশের কাছে ঈর্ষার তেমনি আমাদের কাছে গর্বের । সে দেশের একটি রাস্তার উন্নয়নের ব্যপারে এত কথা কেন বলতে হবে, কেন রোগাক্রান্তদের চলাচলে এত কষ্ট হবে কেন রাস্তা মেরামতের জন্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড়াতে হবে !
শিশুদের রোদে দাঁড়ানোর ছবিগুলো দেখে খুব জানতে ইচ্ছে করলো এত আইন, নিয়ম ও এত উন্নতির পরও যাদের অমনোযোগীতায় সরকারের প্রতি মানুষ আঙ্গুল তোলে সে অমনোযোগী মানুষগুলো আসলে দেশকে নিয়ে কতটা ভাবনা ভাবে ?
আমি খুব বিনীতভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নিবেদন রাখছি যে এই রাস্তাটির ব্যপারে এতগুলো প্রতিবেদন, মতামত ও মানুষের এত কষ্টের কথা তুলে আনার পরও কেন কোন সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হলনা তা খতিয়ে দেখার ।
মানুষের অসহ্যের কারণ হয়ে যোগাযোগ ব্যস্থার এমন বেহাল দশাকে প্রতিবাদের জায়গায় এনে যারা মানব বন্ধনে অংশ নিয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানানোর চেয়ে বেশী করে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এজন্য যে তারা তাদের নিজেদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান দ্বারা বোঝাতে পেরেছেন এদেশের সরকারের উন্নয়ন ভাবনাগুলোকে শ্রদ্ধার জায়গায় রেগে নিজেদের এলাকার উন্নয়নের আকুতিকে । আশা করবো মাওনা থেকে ফুলবাড়িয়া রাস্তার সংস্কার কাজ ও এর শাখা রাস্তারগুলোর সংস্কার কাজে দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজর দেবেন । আমরা দেখতে চাই না কোমলমতি শিশুদের ঘামে ভেজা শরীরে মানব বন্ধনে দাঁড়িয়ে রাস্তা সংস্কারের কোন কথা বলতে দিতে । আইনানুগ বৈধ নাগরিক অধিকার পাওয়ার জন্য রাষ্ট্রের কাজে নিয়োজিত মানুষগুলোর মনোযোগী আচরণই পারে মানুষের সব কষ্টগুলোকে লাঘব করে দিতে ।
সাঈদ চৌধুরী
রসায়নবিদ
ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি
শ্রীপুর, গাজীপুর
Discussion about this post