নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃতির ঘটনায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারসহ রেজিস্ট্রার এবং জনসংযোগ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ও সাংবিধানিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে আগামী একমাসের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এমকে রহমান। যবিপ্রবির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কে এম সাইফুদ্দিন আহমেদ। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
এর আগে ছবি বিকৃতির ঘটনায় গত ৪ নভেম্বর যবিপ্রবির ভিসি, রেজিস্ট্রার এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করেছিলেন। তবে ছবি বিকৃতির ঘটনা প্রমাণিত হলে ছাড় দেওয়া হবে না বলে সেদিন সতর্ক করেছিলেন হাইকোর্ট।
যবিপ্রবির ক্যালেন্ডারে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃতির অভিযোগে রিট দায়ের করেন যশোর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন বিপুল। ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট অভিযোগটি তদন্তের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পরামর্শে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদারকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়। গত ১৫ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিল করে কমিটি।
ওই প্রতিবেদনে ছবি বিকৃতির সত্যতা এবং এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায় খুঁজে পায় তদন্ত কমিটি।
কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির পিতার ছবি এবং ২০১৯ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করা হয়নি। এছাড়া, ২০১৮ সালের ক্যালেন্ডারে জাতির পিতার ছবির ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির নাম লেখাও সমীচীন হয়নি। এবং ২০১৯ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডার পুনঃমুদ্রিত। আগের (প্রথম) প্রিন্ট করা কপিতে জাতির পিতার ছবি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিদ্র করে স্পাইরাল বাইন্ডিং করা হয়। এছাড়া, জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি (ছবির মাথা কেটে) বিকৃত করা হয়, যা প্রথম মুদ্রিত ডেস্ক ক্যালেন্ডার থেকে স্পষ্টতই প্রমাণ পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল, যবিপ্রবির ভিসিসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা তা করেননি। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই তারা দায় এড়াতে পারেন না। ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাদের অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল।
Discussion about this post