ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার ৫ম নিরাপত্তা সংলাপ। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় রোববার (০২ অক্টোবর) দিনব্যাপী এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র।
সংলাপে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে আসন্ন বৈঠকে বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়টিই আলোচনার শীর্ষে থাকবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দিনব্যাপী ওই সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকা পৌঁছেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ইউলিয়াম জিপি মোনাহামের নেতৃত্বে মার্কিন প্রতিনিধি দল। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারাও থাকবেন এ প্রতিনিধি দলে।
অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব (দ্বিপাক্ষিক ও কনস্যুলার) কামরুল আহসানের নেতৃত্বে বাংলাদেশে প্রতিনিধি দলে থাকবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, নিরাপত্তা সংলাপের মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে মতবিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এর মাধ্যমে বৃহৎ পরিসরে রাজনৈতিক, সামরিক বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধি ও শক্তিশালী করার কাজকে এগিয়ে নেওয়া এবং শান্তি রক্ষায় অংশীদারিত্ব, যৌথ সামরিক অনুশীলন ও বিনিময়, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ এবং নিরাপত্তা বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, নিরাপত্তা সংলাপে কৌলশগত অগ্রাধিকারমূলক ইস্যু এবং আঞ্চলিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হবে।
এ ছাড়া বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সশস্ত্র বাহিনী এবং নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়াদি, বৈশ্বিক নিরাপত্তা ইস্যু, ব্লু -ইকোনমি, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন, শান্তি প্রতিষ্ঠা প্রক্রিয়া, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, এবং উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়েও আলোচনা হবে।
নিরাপত্তা বৈঠকে মানবিক নিরাপত্তা বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। যাতে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো বিষয় থেকে মানবিক নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবেলার কৌশল নিয়েও আলোচনা হবে।
জানা যায়, অংশীদারিত্ব সংলাপটি চারটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। যার প্রথম ধাপে কৌলশগত অগ্রাধিকার ও আঞ্চলিক ইস্যু, দ্বিতীয় ধাপে দ্বিপাক্ষিক শসস্ত্র বাহিনী ও নিরাপত্তা ইস্যুতে সহযোগিতা, তৃতীয় বৈশ্বিক নিরাপত্তা এবং সর্বশেষে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবেলা ও শান্তিরক্ষা। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত সকল বিষয় নিয়েই আলোচনা হবে।
এর আগে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ৪র্থ নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ২০১৪ সালের ২২ এপ্রিল ৩য় সংলাপ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ২০১২ সালের এপ্রিলে ঢাকায় প্রথম নিরাপত্তা সংলাপ এবং ২০১৩ সালের এপ্রিলে ওয়াশিংটনে দ্বিতীয় নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
Discussion about this post