মো. রবিউল হক রবি, কুবি প্রতিনিধি : বখাটে বাইকারদের দৌরাত্মে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ।দিন দিন এর মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো থেকে ক্যাম্পাসে আসার স্বতন্ত্র রাস্তা না থাকায় একমাত্র ছাত্রী হলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানার বাইরের রাস্তা দিয়েই ক্যাম্পাসে যাতায়াত করতে হয়।শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল গেট থেকে ডাচ বাংলা মোড় পর্যন্ত পাঁচশ গজ (প্রায়) পথই অন্যতম আতঙ্কের জনপথ।এই রাস্তার ওপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকসহ উপাচার্যের বাস ভবন গেট,একমাত্র ছাত্রীহল নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হল গেট এবং শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল গেট অবস্থিত। চুরি, ছিনতাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রহার,ছাত্রীদের ইভটিজিংসহ গত দশ বছরে প্রায় শতাধিক ঘটনা ঘটেছে এ রাস্তায়। উপাচার্যের বাসভবনের বিপরীত পাশে বনবিভাগের গেট এবং রা¯তার মাঝামাঝি হওয়ায় এ স্থানেই ঘটে সবচেয়ে বেশি ঘটনা। এ রাস্তার কোথাও স্পীড ব্রেকার না থাকায় বখাটেরা এখানে এসে বাইকের স্পিড বাড়িয়ে দেন। হঠ্যাৎ বাইকের হর্নের শব্দে আতঙ্কিত ও বিব্রত হয়ে পড়েন ছাত্রীরা। প্রতিনিয়ত এ রাস্তায় ইভটিজিং এর মত ঘটনা ঘটলেও ভয়ে ও বিচার না পাওয়ার শংকায় অভিযোগ ও দেননা এ সব ছাত্রীরা।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনছাত্রী হল থেকে ক্যাম্পাস অভিমুখে দোকানে যাওয়ার সময় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে পেছন থেকে আসা দুই মটর সাইকেল আরোহী তাদের পেছনে এসে গতি কমিয়ে দেন।এবং আরোহী একজন একছাত্রীর নিতম্বে থাপ্পড় মারেন। এতে ছাত্রী হতবম্ব এবং লজ্জিত হয়ে পড়েন।নাম প্রকাশে অনিñুক প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী পেছন থেকে দৌড়ে আসার আগেই বাইকের গতি বাড়িয়ে বাইক আরোহীরা চলে যান।রাস্তায় নিরাপত্তা বাতি না থাকায় এবং বখাটেরা অপরিচিত ও বহিরাগত হওয়ায় তিনি তাদের চিনতে পারেননি।
চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারী কুমিল্লা শহরের টমছমব্রীজ এলাকার ইমরান হোসেন বাইক যোগে এসে জোর করে এক ছাত্রীকে উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।ছাত্রীর বন্ধুরা ঐ বখাটেকে ধরে প্রক্টরে দেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বখাটেকে শাস্তির আওতায় না এনে মুচলেকা নিয়েই ছেড়ে দেন।
গত বছরের ৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে দ্রুত বেগে আসা মটর সাইকেল অটো বাইককে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে দুই ছাত্রী অটো থেকে পড়ে আহত হন।
গত বছর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে দুই ছিনতাইকারী রিকু নামক এক ছাত্রের ল্যাপটপ ছিনতাই করার চেষ্টা করে।এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যে এসে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।
পাঁচশ গজ রাস্তায় প্রতিনিয়ত বখাটে মটর বাইক অরোহীদের ইভটিজিংসহ এতসব দৌরাত্ম চললেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেননি এমনকি রাস্তায় স্পিড ব্রেকারের ব্যবস্থা ও করেননি।
এ বিষয়ে প্রক্টর মো: আইনুল হক বলেন, ‘মটর বাইক আরোহীদ্বারা ছাত্রী লাঞ্ছনার ঘটনার বিষয় আমি জানিনা এবং কোন অভিযোগও পাইনি। যে অভিযোগগুলো আমরা পাই তার যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। লাঞ্ছনা রোধে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের সচেতনাও জরুরী।’
Discussion about this post