বিডি ল নিউজঃ যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করল ডেভিড ক্যামেরনের কনজার্ভেটিভ পার্টি। বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে ভোটগ্রহণ হয়। এবারের নির্বাচনে প্রায় ৫ কোটি ব্রিটিশ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোটারের উপস্থিতি ছিল ৬৬ শতাংশ। এককভাবে জয়ী হওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল ৩২৬টি আসন। কনজার্ভেটিভ পার্টি লাভ করেছে ৩৩১টি আসন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল লেবার পার্টি লাভ করেছে ২৩২টি আসন।
এবারের যুক্তরাজ্যের সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঘটেছে অনেকগুলো আলোচিত ঘটনা।
প্রথমত, যুক্তরাজ্যের এবারের নির্বাচনে চার বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। চারজনের মধ্যে তিনজনই মহিলা। জিতেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি শেখ রেহানার কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক। আর দু’জন হলেন রূপা হক ও রুশনারা আলী। ৪৩ বছর বয়সী রূপা হক লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। রুশনারা আলীও একই পার্টি থেকে বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। রুশনারা লন্ডনের বেথনাল গ্রিন এ্যান্ড বাউ এলাকা থেকে আগেও নির্বাচিত হয়েছিলেন। পূর্বে দেশটির ছায়া মন্ত্রীও ছিলেন রুশনারা।
দ্বিতীয়ত, লেবার পার্টি প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন এড মিলিব্যান্ড। স্কটল্যান্ডের জাতীয়তাবাদী দল এসএনপির (স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি) কাছে শোচনীয়ভাবে হারের পর তিনি পদত্যাগ করেন। সেখানে এসএনপি ৫৯টি আসনের ৫৬টিতেই জয় পেয়েছে।
তৃতীয়ত, ব্রিটিশ সংসদ নির্বাচনের সাড়ে তিন শ’ বছরের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়লেন গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রনীতি বিভাগের এক ছাত্রী। মাত্র ২০ বছর বয়সে যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হলেন এমহায়রা ব্লাক। আগের রেকর্ডটি গড়েছিলেন ক্রিস্টোফার মংক ৩৫২ বছর আগে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে ডেভন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন মংক। লেবার পার্টির ৭০ বছরের দুর্গ পেইসলি-রেনফ্রিশায়ার সাউথে ডগলাস আলেকজান্ডারকে হারিয়ে নতুন রেকর্ড গড়লেন ব্লাক।
যাই হোক, বহুল ঘটনার ঘনঘটায় নির্বাচনী ফলাফল ডেভিড ক্যামেরনের কনজার্ভেটিভ পার্টির দিকে গেলেও লেবার পার্টিসহ চার বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় আমাদের কাছে অনেক কিছু পরিষ্কার হয়। আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা বৃটেনের রাজনৈতিক অঙ্গনে দিনে দিনে বেশ বড় জায়গা দখল করছে। সেই সাথে আমরা বুঝতে পারছি, সাধারণ বৃটিশের কাছে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূতদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে হলেও এ দেশের ছেলেমেয়েরা বৃটেনের রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিষ্কার ছাপ ফেলছে। দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ ভাল হলে দেশের সুশিক্ষিত ছেলেমেয়েরা রাজনীতিতে নামতে পারত। বহুকাল আগে থেকে বিলেত উচ্চতর লেখাপড়ার পীঠস্থান হওয়ায়, সেখানে পাড়ি জমায় এ ভূ-খণ্ডের অনেক ছেলেমেয়ে। যোগ্যতার বিচারে তার একাংশ সেখানে আবাসন গড়ে, বৃটেনের অভিজাত শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত হয়। পক্ষান্তরে রাজনীতিতে নেমে সেদেশের গণমানুষের হৃদয় জয় করে, নির্বাচনে জেতে, মন্ত্রী হয়। যা সাত সমুদ্র তের নদী পেরিয়ে নাড়ীর বন্ধনের কারণে আমাদেরও গর্বিত করে। আমরা সেই গর্বে আনন্দিত হওয়ার সাথে সাথে তাদের অভিনন্দন জানাই।”জুম বাংলা
Discussion about this post