নিজস্ব প্রতিবেদক: হটলাইন চালুর জন্য ৫০ লাখ টাকা বাজেট চাওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) শামীম আল মামুন হাইকোর্টে উপস্থিত হয়েছেন। এর আগে গত ২০ আগস্ট ভোক্তাদের জরুরি অভিযোগ শুনতে হটলাইন চালুর জন্য ৫০ লাখ টাকা বাজেট চাওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে তাকে তলব করেন হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে বলে গণমাধ্যমকে জানান রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান।
এর আগে গত ২০ আগস্ট আদালতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পক্ষে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আইনজীবী কামরুজ্জামান কচি। রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান।
এদিন আইনজীবী কামরুজ্জামান কচি আদালতকে বলেন, হটলাইন চালু করতে ৫০ লাখ টাকার বাজেট চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তখন আদালত উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, হটলাইন চালু করতে এত টাকা লাগবে? তাহলে তো এর ব্যাখ্যা জানা দরকার। তখন আদালত সংস্থাটির পরিচালককে তলব করেন।
গত ১৬ জুন এক আদেশের পর অধিদফতর ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। ৪ জুলাই করা এ কমিটিতে পরিচালক শামীম আল মামুনকে সভাপতি করা হয়। এরপর ১৪ জুলাই অধিদফতরের মহাপরিচালক (তৎকালীন অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা) মো. হারুন-উজ-জামান ভূঁইয়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে হটলাইন স্থাপনের ব্যয় নির্বাহের জন্য ২০১৯-২০ অর্থ বছরের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ের অনুকূলে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি সরঞ্জামাদি খাতে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ প্রদান বিষয়ে একটি চিঠি দেন।
চিঠিতে বলা হয়, রিট মামলায় (৫৩৫০/২০১৯) অধিদফতরকে ভোক্তাদের সার্বক্ষণিক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে দুই মাসের মধ্যে একটি হটলাইন স্থাপনের জন্য হাইকোর্ট ১৬ জুন আদেশ দেন। এ আদেশ প্রতিপালনের জন্য পরিচালককে (প্রশাসন ও অর্থ) সভাপতি করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, কমিটি ইতোমধ্যে বিটিআরসির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। বিটিআরসি থেকে প্রাপ্ত ধারণানুযায়ী হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী একটি হটলাইন স্থাপন করতে আনুমানিক ৫০ লাখ টাকা ব্যয় হবে। কিন্তু ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেটে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি সরঞ্জামাদি খাতে দুই লাখ টাকা মাত্র বরাদ্দ পাওয়া গেছে, যা হটলাইন স্থাপনের ব্যয় নির্বাহের জন্য অপ্রতুল। এ অবস্থায় হটলাইন স্থাপনে ব্যয় নির্বাহে জরুরি ভিত্তিতে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ করা হলো।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া নামীদামি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের নিম্নমানের (সাব-স্ট্যান্ডার্ড) পণ্য বাজার থেকে সরাতে করা এক রিটের শুনানিতে গত ১৬ জুন ওই আদেশ দেয়া হয়।
সম্প্রতি ৪০৬ খাদ্যপণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে বিএসটিআই। এর মধ্যে ৩১৩ পণ্যের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। ৩১৩ মধ্যে ৫২ পণ্য মানহীন বলে প্রতিবেদন দেয় বিএসটিআই। বাকি ৯৩ পণ্যের পরীক্ষার ফল ১৬ তারিখের মধ্যে দিতে বিএসটিআইকে নির্দেশ দেন আদালত। সে অনুসারে বিএসটিআই ৯৩ পণ্যের মান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে। এর মধ্যে ২২ পণ্য নিম্নমানের বলে জানায় তারা।
গত ৮ মে ভোক্তা অধিকার সংস্থা ‘কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি’র (সিসিএস) নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান ওই রিট করেন। গত ১২ মে ওই রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বাজার থেকে আইনানুসারে এসব পণ্য সরিয়ে নিতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে নির্দেশ দেন।
Discussion about this post