বান্দরবান প্রতিনিধি: বান্দরবানের রাজবিলা আওয়ামী লীগের এক সমর্থককে অপহরণের পর গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। নিহতের নাম ক্যা চিং থোয়াই মারমা (২৭)। সে রাজবিলা ইউনিয়নের ৪নং রাবার বাগান এলাকার তাউ থোয়াই মারমার ছেলে।
শনিবার রাত দুইটার দিকে রাজবিলা ইউনিয়নের ৪নং রাবার বাগান এলাকা থেকে অপহরণের এ ঘটনা ঘটে। পরে আজ রবিবার ভোরে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ৫ নং রাবার বাগান এলাকায় তার লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়।
এ বিষয়ে রাজবিলার ইউপি চেয়ারম্যান কে অং প্রু মারমা জানান, নিহত ক্য চিং আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন। তার ভাই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। শনিবার রাতে তাকে খুঁজতে বাসায় যায় সন্ত্রাসীরা। এ সময় বাসায় তাকে না পেয়ে তার ছোট ভাই ক্য চিং থোয়াইকে ঘুম থেকে উঠিয়ে অস্ত্রের মুখে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে ৫ নং রাবার বাগানে রাস্তার উপর দাঁড় করিয়ে তাকে গুলি ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। তবে পাহাড়ের কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মো. এনামুল হক ভূইয়া বলেন, ‘রাজবিলা ইউনিয়নের ৪নং রাবার বাগান এলাকায় একজনকে অপহরণের পর গুলি করে হত্যার খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে গত ৭ মে বান্দরবানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) বিনয় তঞ্চঙ্গ্যা (৩১) নামে এক কর্মী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় পুরাধন তঞ্চঙ্গ্যা (৩২) নামে আরো একজনকে অপহরণ করা হয়। তবে পুরাধনকে এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
এছাড়াও গত ৯ মে জেলার কুহালং ইউনিয়নে জয়মনি তঞ্চঙ্গ্যা নামে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) আরও এক সমর্থককে গুলি হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। নিহত জয়মনি ছিলেন পেশায় ব্যবসায়ী।
এদিকে মিয়ানমার সীমান্তে সক্রিয় আরাকান লিবারেশন পার্টির একটি দলছুট অংশ বান্দরবানের রাজবিলা ও কুহালং এলাকায় তৎপরতা চালাচ্ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। ওই সন্ত্রাসী গ্রুপটি নিজেদের ‘মগ পার্টি’ নামে পরিচয় দেয়। সম্প্রতি রাঙামাটির রাজস্থলীতে একটি ঘটনার জের ধরে জেএসএসের সঙ্গে মগ পার্টির বিরোধের সূত্রপাত হয়। ওই ঘটনার পাল্টা–পাল্টি হিসেবে খুন এবং অপহরণের ঘটনা ঘটছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
রাজবিলা ইউপি চেয়ারম্যান ক্য অং প্রু মারমা আরো বলেন, রাজবিলা ও কুহালং ইউনিয়নের বাসিন্দারা এ ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন। আতঙ্ক কাটানো ও সন্ত্রাসীদের বিতাড়নের জন্য তাইংখালীতে একটি অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তা না হলে আবার হত্যা ও অপহরণের মতো ঘটনা ঘটবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
উল্লেখ্য, গত ৯ মে ওই এলাকায় সন্ত্রাসীরা জনসংহতি সমিতির সমর্থক জয় মনি তঞ্চঙ্গ্যাকে গুলি করে হত্যা করে। এর আগে ৭ মে সন্ত্রাসীরা জনসংহতি সমিতির কর্মী বিনয় তঞ্চঙ্গ্যাকে গুলি করে হত্যা করে। অপহরণ করা হয় ফোলাধন তঞ্চঙ্গ্যা নামে অপর এক কর্মীকে। এখনো তার কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
Discussion about this post