ড. মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী। সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি এবং সাবেক সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্যানেলের ভরাডুবির কারণ অনুসন্ধানে এই আইনজীবী নেতার মুখোমুখি হয়েছেন ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডট কম সম্পাদক ড. বদরুল হাসান কচি।
প্রথমত আমি বলব, যেকোন নির্বাচনে বিজয় নির্ভর করে নির্বাচন পরিচালনা এবং প্রার্থিদের ব্যক্তিগত যোগ্যতার ওপর। ঢাকা বার ও সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচন পরিচালনায় আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের কিছু ত্রুটি ছিল। পাশাপাশি প্রার্থি মনোনয়নে বেশ বিলম্ব করা হয়েছে। এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের প্রার্থিদের কিছু ভুল ছিল। ভোটারের কাছে নমনীয়তার সাথে ভোট চাওয়ার ক্ষেত্রে প্রার্থিদের সীমাবদ্ধতা ছিল বলে আমার মনে হয়। এছাড়া নির্বাচন পরিচালনা কমিটি এবং প্রার্থিরা ঢাকার বাহিরের যারা ভোটার তাঁদেরকে নির্বাচনে সম্পৃক্ত করা ও তাঁদের সাথে যথাযথ যোগাযোগসহ তাদেরকে ঢাকায় এনে তাঁদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়গুলো তদারকি করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
দ্বিতীয়ত, দল ক্ষমতায় থাকলে সুপ্রিম কোর্ট বারে সরকারপন্থিদের জয়লাভ করা কষ্টসাধ্য। কেননা যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা কিছুটা সরকার বিরোধী হয়। ২০০১ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিলনা অথচ তখন আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা বিজয়ী হয়েছেন। আবার ২০১০ থেকে ২০১৭ এই সময়কালে সভাপতি পদে ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন এবং সম্পাদক পদে আমি একবার জয়ী হতে পেরেছি। এছাড়া সব সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের জয় হয়েছে। এছাড়া সরকারি দলে কোন্দল একটু বেশিই থাকে যা শতভাগ নিরসন করা যায়না। কারণ সরকারি দলের আইনজীবীদের চাওয়া পাওয়া বেশি থাকে, কেউ কেউ DAG হতে চান কেউবা চান AAG হতে, অনেকে আবার বিচারপতি হতে চান। কিন্তু সকলের চাওয়া পাওয়া তো পূরণ করা সম্ভব হয়না। আবার যাদেরকে মূল্যায়ন করা হয় অনেক সময় দেখা যায় তারা কাজের ক্ষেত্রে সিরিয়াস হয় না। ফলে একদিকে অবমূল্যায়নের ক্ষোভ অপরদিকে মূল্যায়ন পাওয়াদের কাজের প্রতি শৈথিল্য সমস্যা তৈরি করে।
তবে সাধারণ আইনজীবীরা সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট হলেও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের সরকার বিরোধী মনোভাব নির্বাচনকে কমবেশি প্রভাবিত করে। ফলে বিগত সকল নির্বাচনের চেয়ে এবারে সমন্বয় পরিষদের আইনজীবীরা বেশি ঐক্যবদ্ধ থাকলেও ভরাডুবি ঠেকানো যায়নি।
Discussion about this post