রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় বাড়ীর মালিক (গৃহকর্ত্রী) মনোয়ারা সুলতানাকে গলা কেটে হত্যা করায় বাড়ীর দারোয়ান রবিকে মৃত্যুদণ্ড ও ভাড়াটিয়া লাবণ্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দু’জনকেই দশ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৩ এর বিচারক সাঈদ আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার আগে দুই আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয় এবং রায়ের পর তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
মামলার এজহার থেকে জানা যায়, ভিকটিম মনোয়ারা সুলতানার (৬৪) স্বামী ডা. মোহাম্মদ ইউসুফ ঘটনার প্রায় ৭ বছর আগে মারা গেছেন। এরপর থেকে তিনি উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় নিজের বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। তার তিন পুত্রের মধ্যে বড় ছেলে অস্ট্রোলিয়া প্রবাসী, মেজো ছেলে সেনাবাহিনীর অফিসার এবং ছোট ছেলে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।
মনোয়ারা নিজ বাড়ীর ২য় তলায় বসবাস করতেন। বাড়ীর নিচ তলা, ৩য় ও ৪র্থ তলায় ভাড়া দেয়া ছিল। ৩য় তলায় ভাড়াটিয়া আসামি লাইলী আক্তার লাবণ্য বাহিরের মেয়েদের এনে অবৈধ দেহ ব্যবসা শুরু করছিলেন। পরে ভিকটিম মনোয়ারা (বাড়ীর মালিক) জানতে পারে আসামি লাবণ্যকে বাসা ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। অন্যথায় পুলিশের ভয় দেখান।
এতে আসামি লাবণ্য ও বাড়ীর দারোয়ান গোলাম নবী ওরফে রবি ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিম মনোয়ারাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন এবং স্বর্ণালংকার ও টাকা পয়সা অত্মসাৎ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
২০১৬ সালের ৪ জুন মাগরিবের নামাজের পর আসামি লাবণ্য ও দাড়োয়ান রবি কৌশলে ভিকটিম মনোয়ারার বাসায় প্রবেশ করেন। পরে লাবণ্য তার মুখ চেপে ধরেন এবং আসামি রবি ছুরি দিয়ে মনোয়ারার গলা কাটে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের পর আসামি লাবণ্য ও রবি ঘরে থাকা এক লক্ষ ১৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।
ওই ঘটনায় মনোয়ারার মোজে ছেলে লে. কর্নেল খালিদ বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামি রবি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
২০১৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান দুই জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ২১ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলায় ২২ সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ২০ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন।
Discussion about this post