রাঙ্গামাটি জেলা জজ আদালত ভবন ও বিচারকদের আবাসন ব্যবস্থাসহ নানা সংকটের কারণে বিচার কার্যক্রম পরিচালনায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। অপরদিকে ভোগান্তিতে পড়ছেন বিচারপ্রার্থী লোকজন। পাশাপাশি নিষ্পত্তির বিলম্বের কারণে দিন দিন বাড়ছে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা। গত অক্টোবরে রাঙ্গামাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা দায়ের হয় ৯৭টি। তার আগে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৭২টি। সেগুলোর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ১৮৭টি। বর্তমানে এ আদালতে প্রায় ২ হাজার মামলা বিচারাধীন।<br /> আদালত সূত্র জানায়, রাঙ্গামাটি জজ কোর্টের বিচারকদের আবাসন সমস্যাসহ নানা সংকট বিরাজমান। আদালত ভবনে পর্যাপ্ত জায়গা নেই। নেই প্রয়োজনীয় এজলাস। লোকবল কম। বর্তমানে জেলা জজের পদটিও খালি। নানা সমস্যার কারণে দাফতরিক ও বিচারিক কাজ চালাতে অনেক ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।<br /> রঙ্গামাটি জেলায় জজ কোর্ট চালু হয় দ্বিতলবিশিষ্ট পুরাতন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে। পরে সম্প্রসারিত তৃতীয় তলায় চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় সেখানে। একই ভবনে গাদাগাদি করে ম্যাজিস্ট্রেট এবং জজ কোর্টের কার্যক্রম চলছে। পর্যাপ্ত কক্ষ না থাকায় কোর্ট পুলিশের কর্মকর্তারা কাজ করছেন বারান্দায়। কোর্ট হাজতে টয়লেটের সমস্যাও বিরাজমান।<br /> সংশ্লিষ্টরা জানান, দুর্গম পার্বত্য এলাকার মানুষ অন্য ক্ষেত্রের সঙ্গে বিচারপ্রাপ্তিতেও ছিল পিছিয়ে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পার্বত্য এলাকার মানুষের বিচারিক সুবিধার জন্য ২০০৮ সালের ১ জুন তিন পার্বত্য জেলায় জজ কোর্ট চালু করে সরকার। কিন্তু জজ কোর্ট চালুর এতদিন পরও অবকাঠামোগত সুবিধা অবাস্তবায়িত হয়নি। ফলে জজ কোর্টের সুবিধা এখানকার মানুষ আজও ভোগ করতে পারছেন না। পাহাড়ের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ বিচার চাইতে গিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন আগের মতোই। মামলা জটের কারণে বছরের পর বছর ঘুরে বিচারপ্রার্থীদের অনেকেই নিঃস্ব হচ্ছেন।<br /> সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে ৫০ শতক জায়গা অধিগ্রহণ করা হলেও নকশা জটিলতার কারণে এ আদালত ভবনটি নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। একই ভবনে পরিচালিত হয় সব আদালতের বিচারিক কাজ। পৃথক কক্ষ না থাকায় বিচারকদের বসার সংকুলান হয় না। আমলি আদালতসহ মোট ১৩টি আদালতের বিচারিক কাজ চালাতে হয় মাত্র তিনটি এজলাসে বসে। এছাড়া বিচারকদের আবাসিক ভবন নেই। তারা থাকেন ভাড়া বাসায়। ফলে নিরাপত্তার সংকটও বিরাজমান।</p>
Discussion about this post