চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মোহাম্মদ সেলিম মিয়া মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগে নারী নির্যাতন মামলার বাদী ও তার স্বামীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের দায়ের করা মিথ্যা মামলার তিন আসামিকে জামিন দিয়ে গতকাল রবিবার বিকেলে এ আদেশ দেন।<br /> কারাগারে পাঠানো স্বামী-স্ত্রীর নাম সুমি আক্তার ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম। তারা নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার আলীনগর এলাকার বাসিন্দা। প্রতারণার অভিযোগে আদালত স্বামী-স্ত্রী দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন পুলিশকে।<br /> ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, চলতি বছরের ৫ মে সুমি আক্তার তার প্রতিবেশী তিনজনের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০/৩০ ধারায় ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আর্জিতে বলা হয়, ২৫ এপ্রিল মফিজ, শফিক ও এরশাদ তাদের আলীনগরের বাসায় গিয়ে সুমি আক্তারের শ্লীলতাহানি করেন। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠান।<br /> যাদের মামলার আসামি করা হয়েছিল তারা হলেন-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের জুলফিকার আলীর ছেলে মফিজ ও শফিক এবং তাদের পাশের বাড়ির এরশাদ। বাদী সুমির স্বামী ইব্রাহিমের বাড়িও একই গ্রামে। সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে গত ৬ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ১ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ নভেম্বর তিন আসামিকে তাদের গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।<br /> ট্রাইব্যুনালের পিপি এ্যাডভোকেট এম এ নাসের বলেন, পূর্বশত্রুতার জের ধরে সুমি আক্তার ও তার স্বামী মিলে তিন প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে তাদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা দায়ের করেছিলেন। রবিবার তাদের জামিন আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য ছিল। আদালতে উপস্থিত হয়ে সুমি আক্তারই তাদের জামিনে আপত্তি নেই বলে জানালে আদালতের সন্দেহ হয়। সুমি আক্তার বলেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকে মামলাটি করা হয়েছিল। স্বামীর সঙ্গে তিন আসামির পূর্ববিরোধকে কেন্দ্র করে তার নির্দেশে সুমি মামলাটি করেছিলেন বলে আদালতকে জানান। এর পর পরই আদালত সুমি ও তার স্বামীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং তাদের বিরুদ্ধে হয়রানি ও প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়।</p>
Discussion about this post