বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে মানহানি ও আদালত অবমাননার মামলা হওয়া উচিত বলে আইন বিশেষজ্ঞদের অভিমত। প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে সাবেক বিচারপতি এ এইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, তা অনভিপ্রেত। ওই বক্তব্যের জন্য তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা ও মানহানির মামলা হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।</p> পাশাপাশি বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে এ ধরনের বক্তব্য এখনই বন্ধ করতে মানিকের প্রতি পরামর্শ দিয়েছেন তারা। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন-</p> ‘বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর আচরণ বিচারকসুলভ নয়। তিনি বিচার অঙ্গনকে বিতর্কিত করে চলেছেন। এশিয়া মহাদেশের মধ্যে একজন বিচারপতির আদালত অঙ্গনে সংবাদ সম্মেলনের কোনো নজির নেই। তিনি একদিকে রাজনৈতিক মিছিল সমাবেশ করছেন, টকশো করছেন, আবার রায় লিখলেন যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। আশা করি, প্রধান বিচারপতি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’</p> সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মহসিন রশিদ বলেন, ‘সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর বক্তব্য অবশ্যই আদালত অবমাননাকর। কারণ প্রধান বিচারপতি একটি প্রতিষ্ঠান। ব্যক্তি হিসেবে এসকে সিনহার বিরুদ্ধে বললে, সেটা এক ব্যাপার। আর প্রধান বিচারপতি হিসেবে বলার অর্থই একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বলা। বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা অবশ্যই আদালত অবমাননা হবে।</p> এক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার উচিত হবে, ব্যক্তিগতভাবে মানিকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা। এটা করার এখতিয়ারও প্রধান বিচারপতির রয়েছে। তিনি আরও বলেন, সাবেক বিচারপতি মানিকের কর্মকাণ্ডে প্রতিটি মুহূর্তে বিচার বিভাগের ভাবর্মূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। এটা অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত।</p> সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ও সিনিয়র আইনজীবী এমকে রহমান বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগের অভিভাবক। তার সম্পর্কে সাবেক বিচারপতি যেসব মন্তব্য করেছেন, তা মানহানিকর ও আদালত অবমাননাকর। তার বক্তব্য বিচার বিভাগের ভাবর্মূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। এভাবে চলতে থাকলে বিচার বিভাগ আস্থার সংকটে পড়বে। এটা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।’</p> সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, ‘এই পরিস্থিতি দেশের উচ্চতর আদালতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। বিচার বিভাগের ওপর জনগণের আস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থা যতদিন চলবে-ততই দেশ ও উচ্চতর আদালতের জন্য অমঙ্গলজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।<p style="text-align: justify;">উল্লেখ্য, সোমবার এক প্রেস কনফারেন্সে সাবেক বিচারপতি মানিক বলেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিরা রায় লিখতে পারবে না- এই কথা বহু আগে খালেদা জিয়া বলেছিলেন। উনি খালেদা জিয়ার মুখপাত্র হয়ে বিএনপির এজেন্ডা চরিতার্থ করার জন্য এটা করছেন। উনার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘যে প্রধান বিচারপতি নিজে বলেছে, সে শান্তি কমিটির সদস্য ছিল। যে প্রধান বিচারপতি নিজে বলেছে, সে আসামি সাকা চৌধুরীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখায় করেননি, তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী বেঞ্চ গঠন করেছে, সেই প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগের কলংক, না যারা একথাগুলো মিডিয়ার কাছে বলছে, তারা কলংক এ বিচারের ভার আপনাদের ওপর।’</p>
Discussion about this post