রায় গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে প্রধান বিচারপতির প্রতি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম সামসুদ্দিন চৌধুরীর লেখা চিঠি প্রস্তুত হয়েছে। চিঠির খসড়া সংশোধনের পর তা চূড়ান্ত করতে দেরি হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার তা প্রধান বিচারপতির দফতরে জমা দিতে পারেননি তিনি। তাই আগামীকাল রোববার অফিস খোলার দিন এই চিঠি জমা দেওয়া হবে। বিচারপতি সামসুদ্দিনের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।</p> চিঠির একটি অনুলিপিও আমাদের সরবরাহ করেছে সূত্র। চিঠিতে বিচারপতি সামসুদ্দিন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে লিখেছেন, ‘আপনাকে এই মর্মে অবহিত করছি যে, অবসরে যাওয়ার পর আমি কর্তৃক শুনানিকৃত ও লেখার দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল মামলার রায় ও আদেশ (যার সিংহভাগই ছিল লিভ পিটিশনের ওপর আদেশ) লেখার কাজ আমি ইতোমধ্যেই সমাপ্ত করেছি বিধায়, আমার হাতে লেখা রায় ও আদেশসমূহ গ্রহণের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। আমার প্রিজাইডিং জজ, মাননীয় বিচারপতি জনাব মোঃ আবদুল ওয়াহহাব মিঞাকে আমার লেখা সমাপ্ত হওয়া রায় ও আদেশগুলো গ্রহণ করার অনুরোধ করলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে বলেন যে, মাননীয় প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা অনুসারে কোনো অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির লিখিত রায় ও আদেশ গ্রহণ করা যাচ্ছে না। আমি অবসরে যাওয়ার পর আপনি বৈষম্যমূলকভাবে আমার অফিস তালাবদ্ধ করেছেন, সকল অফিস স্টাফ ও সুবিধা থেকে আমাকে বঞ্চিত করায় আমি আমার হাতে লেখা রায়সমূহ টাইপ করতে পারি নাই। আমি ইতোপূর্বে আপনাকে অবহিত করেছি যে, আপনার এরূপ আচরণ সংবিধান, আইন ও প্রথাবিরোধী ও একইসাথে ন্যায়বিচার পরিপন্থি।</p> কিছুদিন পূর্বে প্রদেয় আপনার বক্তব্য ‘বিচারপতিদের অবসরে যাওয়ার পর রায় লেখা অসাংবিধানিক’-এ বক্তব্যের ওপর ইতোমধ্যে মহান সংসদে আলোচনা হয়েছে এবং সংসদ আপনার বক্তব্যের সহিত দ্বিমত পোষণ করেছেন ও বিচারপতিদের অবসরে যাওয়ার পর রায় লিখতে কোনো সাংবিধানিক বাধা নেই এবং এটা অসাংবিধানিক নয় মর্মে মন্তব্য করেছেন। একই মন্তব্য করেছেন দেশের বিখ্যাত আইনজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ। আপনার ব্যক্তিগত মতামত ও বিশ্বাসের জন্য আপনি বিচারব্যবস্থা আইন ও প্রথাকে অস্বীকার করতে পারেন না। কারণ আপনি সাংবিধানিক শপথ নিয়েছেন।</p> এমতাবস্থায় আমি কর্তৃক হাতে লিখিত রায় ও আদেশসমূহ গ্রহণ করা, ন্যায়বিচারের স্বার্থে একান্ত আবশ্যক।’ চিঠির অনুলিপি আইনমন্ত্রী ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতিদের দেওয়া হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
Discussion about this post