দেড় বছরে একাধিক ব্লগার হত্যা এবং শনিবার একাধিক প্রকাশকের ওপর একযোগে হামলার কারণ হিসেবে বিচারহীনতার অভিযোগকে ‘বাস্তবতা’ হিসেবে মেনে নিয়েছেন আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে রবিবার সকালে যুগ্ম-জেলা জজদের একটি প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই মন্তব্য করেন তিনি।
অজানা দুর্বৃত্তদের আঘাতে নিহত প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনের বাবা নিজে থেকেই বলেছেন, তিনি বিচার চান না। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিচারহীনতার কারণে এসব ঘটনা বাড়ছে।
এই বক্তব্যের বিষয়ে আইনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘দেখেন এই জিনিস আমি স্বীকার করি। আজ উনার (নিহত প্রকাশকের বাবা) যে বক্তব্য সেটার সঙ্গে যৌথ (একই সঙ্গে) ইমোসন ও রিয়েলিটির সম্পর্ক আছে।’
‘তবে এসব ঘটনা উদঘাটনে একটু সময় লাগে’ উল্লেখ করে আনিসুল হক বলেন, ‘এগুলো হচ্ছে চোরাগোপ্তা হত্যা। এগুলোর রহস্য উদঘানের সময় লাগে। সেই সময়টা কিন্তু দিতে হবে।’
আনিসুল হক বলেন, ‘আমার বিশ্বাস সেই সময়টুকু পেলে আমরা শুধু রহস্যই উদঘাটন করতে পারব তাই নয়, এই ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার সম্পন্ন করে অন্য কেউ যাতে এমন কাজ না করে সেটাও নিশ্চিত করা হবে।’
গত দেড় বছরেও এ সংক্রান্ত পাঁচটি ঘটনার কোনোটিরই রহস্য উদঘাটন হয়নি। এত সময় যাওয়ার পরও কেন গোয়েন্দারা সেটা পারলো না?
সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের এই কথার জবাব আমার কাছে আছে। এরপরও বলতে পারছি না, বর্তমানে যে তদন্ত চলছে এবং ভবিষ্যতে যে তদন্ত হবে তার স্বার্থে।’
‘গত কালকের ঘটনায় প্রকৃত অর্থে আমি খুবই মর্মাহত। দুঃখ প্রকাশ করার ভাষা আমার নেই। কিছুক্ষণ আগেও আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। কিছু পদক্ষেপের কথা আপনাদের বলতে পারব। তবে, কিছু পদক্ষেপের কথা আমি বলব না তদন্তের স্বার্থে’ যোগ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আইনমন্ত্রী হিসেবে আমি বলতে পারি, তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগপত্র দাখিলের পর বিচারটা যাতে তাড়াতাড়ি হয় সেই ব্যবস্থা অবশ্যই আমরা নেব।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজন ও রাকিবের হত্যার বিষয়ে আপনাদের বলেছিলাম, সেই কথা আমরা রেখেছি। ব্লগার-প্রকাশকদের বিষয়েও আমি বলছি, যত দ্রুত সম্ভব এই বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে অপরাধগুলো মোকাবিলা করতে চাই।’
আইনমন্ত্রী এ সময় দেশবাসীর কাছেও সহযোগিতা চান।
তিনি বলেন, ‘দেশবাসীর কাছে বলতে চাই, আপনাদের কাছে এ সংক্রান্ত যে কোনো সন্দেহজনক বিষয় মনে হলে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে শেয়ার করুন।’
বিচারকদের প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মুহাম্মদ জহিরুল হক।
সভাপতিত্ব করেন বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি মূসা খালেদ।
Discussion about this post