বিচারিক জবাবদিহি নিশ্চিত করতে নির্বাহী ও আইনসভা থেকে প্রভাবমুক্ত একটি স্বাধীন বিচারিক কাঠামো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ।
তিনি বলেছেন, অসদাচরণের জন্য বিচারকদের জবাবদিহির মুখোমুখি করতে বিশ্বে স্বাধীন জুডিশিয়াল কাউন্সিল জনপ্রিয় কাঠামো। নাগরিক হিসেবে তাঁরও আপিল ও রিভিউ করার অধিকার আছে। অপসারণ-সংক্রান্ত সাম্প্রতিক আপিল বিভাগের একটি রায়ের প্রেক্ষাপটে অপসারণ-প্রক্রিয়া নিয়ে রিট করার সুযোগ অনেকটা সংকুচিত হয়ে গেছে।
গতকাল শনিবার ‘জাজিং দ্য জাজেস’ শীর্ষক বক্তৃতায় বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ এসব কথা বলেন। রাজধানীর ই এম কে সেন্টারে থিংক লিগ্যাল বাংলাদেশ ওই বক্তৃতার আয়োজন করে। এটি ছিল সপ্তম বক্তৃতা।
বক্তৃতায় বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ বলেন, ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আইনি ব্যবস্থায় সংবিধান, আইনি মূল্যবোধ ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ব্যক্তি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আদালতে আসেন। বিচারক সংবিধান ও আইনের অধীনে তা নিষ্পত্তি করেন। বিচারকেরা মানুষ, কেউ অনিয়ম করলে বা ঘুষ নেওয়া ও দুর্নীতির মতো ফৌজদারি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকলে কে তাদের জাজ (মূল্যায়ন) করবে?’
‘জাজিং দ্য জাজেস’ শীর্ষক বক্তৃতায় বিচারপতি হাসান আরিফ বলেন, বিচার বিভাগ সংবিধান ও আইন দিয়ে সৃষ্ট প্রতিষ্ঠান। সমাজ, আইন ও সংবিধানের কাছে জবাবদিহি করবে এবং এটি নিশ্চিত করতে হবে। বিচারকের কোনো সিদ্ধান্ত তাঁর ঊর্ধ্বতন আদালতেও পুনর্বিবেচনা হয়। অন্যদিকে সংবিধানের বিধান অনুসারে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বিষয় তদারক করবেন হাইকোর্ট। নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক্করণ-সংক্রান্ত মাসদার হোসেন মামলার রায়েও এটি আছে। অথচ তদারকির ক্ষেত্রে বড় কিছু বাধা আছে, নিয়ন্ত্রণ এখনো অনেকাংশে নির্বাহীদের আওতায়।
বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ বলেন, সংবিধান বলেছে, একজন বিচারকের ‘গুরুতর অসদাচরণ’ পাওয়া গেলে তাঁকে অপসারণ করা যাবে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এম এ মতিন, আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ এফ এম আবদুর রহমান, বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি নাইমা হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post