বিচার বিভাগকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আপিল বিভাগ। অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি সংক্রান্ত মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের শুনানিকালে এ মন্তব্য করেন আদালত।
শৃঙ্খলাবিধির গেজেট জারিতে রাষ্ট্রপক্ষ বেশ কয়েক দফায় সময় নেয়। সবশেষ মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) আবারও দুই সপ্তাহ সময় আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। অ্যাটর্নি জেনারেলের সময় আবেদনের পর আদালত বলেন, এটা কি? সরকার কি আছে! বিচার বিভাগকে জিম্মি করে রাখছেন তো।
আদালত আরও বলেন, রাষ্ট্রের কাছে ব্যক্তি নয়, প্রতিষ্ঠান বড়। রাষ্ট্রের পক্ষে একটা ফেয়ার প্লে-এর বিষয় আছে। একটা যৌক্তিক কারণ থাকবে তো।
এসব কথা বলে ফের দুই সপ্তাহ সময় মঞ্জুর করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। এর আগে সবশেষ ২৭ ফেব্রুয়ারি শৃঙ্খলাবিধি প্রণয়নে ১৪ মার্চ পর্যন্ত সময় মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার মামলাটি কার্যতালিকায় আসলে আদালত নতুন করে এই সময় দেন। এ নিয়ে নবম বারের মতো আদালতের কাছ থেকে সময় নিলো সরকার।
অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধি চূড়ান্ত করে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে আপিল বিভাগ এর আগে কয়েক দফা সময় দেন। সেই নির্দেশ বাস্তবায়ন না করায় ৮ ডিসেম্বর আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে তলব করে। তবে ১১ ডিসেম্বর রাতে আইন মন্ত্রণালয় এক পরিপত্রের মাধ্যমে জানায়, নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির গেজেট প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা নেই বলে রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
তবে রাষ্ট্রপতির এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে ১২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ দ্বিমত পোষণ করেন। আদালত বলেছেন, রাষ্ট্রপতিকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। বিধি প্রণয়ন সম্পর্কে আপিল বিভাগ বলেন, এটা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্ন। এখানে কোনো কম্প্রোমাইজ নেই।
উল্লেখ্য, মাসদার হোসেন মামলার রায়ের ৭ নম্বর নির্দেশনায় জুডিশিয়াল সার্ভিসের সদস্যদের জন্য পৃথক শৃঙ্খলাবিধি প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে।
Discussion about this post