দীর্ঘ দিন ধরে বিনা বিচারে কারাবন্দি চার নারীর বিষয়ে আদেশের জন্য ২৬ জানুয়ারি দিন ধার্য্য করেছেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি শেষে আদেশের জন্য এই দিন ঠিক করেন।
কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষ সোমবার (১৬ জানুয়ারি) সকালেই চার নারীকে আদালতে নিয়ে আসে। আদালতে এ মামলার কার্যক্রম শুরু হলে আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দীকা চার নারীর মামলার নথি আদালতে উপস্থাপন করেন।
উন্মুক্ত আদালতে এক এক করে চার নারীকে ডেকে কথা বলেন বিচারকরা; কে কত বছর ধরে কারাগারে, মামলা চলে কিনা ইত্যাদি জানতে চাওয়া হয় তাদের কাছে। এরপর ২৬ জানুয়ারি আদেশের দিন নির্ধারণ করে আদালত চার মামলার নথি সারাংশ করে জমা দিতে বলে লিগ্যাল এইডের আইনজীবীকে।
কারাবন্দি এই চার নারী হলেন, সুমি আক্তার রেশমা, শাহনাজ বেগম, রাজিয়া সুলতানা ও রাণী ওরফে নুপুর।
এদের মধ্যে রাজিয়া সুলতানা, সুমি আক্তার, শাহনাজ বেগমের মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা। তিনি বলেন, রাজিয়া সুলতানার মামলায় ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছে; শাহনাজ বেগমের মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছে ১৩ জন, এছাড়া সুমি আক্তারের মামলার বিচারও চলছে। তাই আদালত একে বিনা বিচার বলছেন না।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলার ধর্মগঞ্জের আশরাফ আলীর মেয়ে সুমি আক্তার রেশমা রাজধানীর শ্যামপুর থানার ২০০৮ সালের একটি হত্যা মামলায় ২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি গ্রেফতার হন। তখন থেকেই তিনি কারাগারে। ঢাকার মহানগর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন এ মামলায় ৫০ বার হাজির করা হয়েছে রেশমাকে। সর্বশেষ চলতি বছর ১৬ সেপ্টেম্বর তাকে হাজির করা হয়।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ইলমদি গ্রামের আলম খালাসীর মেয়ে শাহনাজ বেগম কারাগারে আছেন ২০০৮ সাল থেকে। ঢাকার দোহার থানার একটি হত্যা মামলায় ওই বছর ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে গ্রেফতার করা হয়। মামলাটি বর্তমানে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭৬ বার তাকে ওই আদালতে হাজির করা হলেও বিচার শেষ হয়নি।
গাজীপুরের টঙ্গী থানার বেদে বহর এলাকার উকুল উদ্দিনের মেয়ে রাজিয়া সুলতানা তুরাগ থানার এক হত্যা মামলায় ২০০৯ সালের ২১ মে গ্রেপ্তার হন। ঢাকা মহানগর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন এ মামলায় ৬০ বার তাকে হাজির করা হয়েছে। সর্বশেষ চলতি বছরের ৯ আগস্ট তাকে হাজির করা হয়।
রাণী ওরফে নুপুর ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার বোরকা নতুন বাজার গ্রামের চান মিয়ার মেয়ে। ঢাকার রমনা থানায় ২০০৯ সালে দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলায় ওই বছর ২১ নভেম্বর তাকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন এ মামলায় ৬৫ বার তাকে হাজির করা হয়েছে। সর্বশেষ চলতি বছরের ২১ আগস্ট তার হাজিরার দিন ছিল।
Discussion about this post