সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান হাইকোর্টের বিচারক বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেছেন, বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে দীর্ঘদিন কারাগারে আটক থাকার পর মুক্তি পাওয়া বন্দিদের পুনর্বাসনে দেশে কোন আইন নেই। পুনর্বাসনের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন দরকার।
তিনি বলেন, ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য টট আইন রয়েছে। সরকারও এ ধরণের বন্দিদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে। কিন্তু পুনর্বাসনের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন নেই। এ ধরণের আইন থাকলে তাদেরকে পুনর্বাসন করা সহজ সাধ্য হত।
সুপ্রিম কোর্টের কনফারেন্স লাউঞ্জে আজ মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, বিচারের দীর্ঘসূত্রিতায় দীর্ঘদিন আটক বন্দিদের নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর লিগ্যাল এইড কমিটি তাদের আইনি সহায়তা দেয়ার উদ্যোগ নেয়। সেই উদ্যোগের প্রেক্ষিতেই হাইকোর্ট তাদেরকে জামিনে মুক্তি এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির জন্য বিচারিক আদালতকে নির্দেশ প্রদান করে।
তিনি বলেন, শিপন নামে এক ব্যক্তি দেড় যুগ কারাগারে আটক ছিল। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে তার মামলাও নিষ্পত্তি হয়নি। আমরা তাকে আদালতে হাজির করে যখন বক্তব্য গ্রহণ করলাম, তখন সে জানালো- প্রতিপক্ষরা ঘটনার পরপরই তার একটি হাত কেটে ফেলেছে এবং দীর্ঘদিন কারাগারে বন্দি থাকার কারণে পরিবারের সদস্যরাও তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে না। ফলে তিনি মুক্তি পেয়ে কোথায় আশ্রয় নেবেন, সেই সম্পর্কেই তিনি কিছু বলতে পারেননি। পরবর্তীতে আমরা তার পুনর্বাসনের জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদান করি।
সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান এই বিচারপতি বলেন, এই ক্ষেত্রে আইন থাকলে বিষয়টি আরো সহজ হতো। বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম বলেন, এ ধরণের বন্দিদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রেরও দায়বদ্ধতা রয়েছে এবং এ সকল বিষয় নিয়ে যত বেশি ইতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তখন সরকারও তাদের পুনর্বাসনে চাপ অনুভব করবে। এ ছাড়া বেসরকারি এনজিওগুলোরও ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।
অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদক ব্যারিস্টার এম মাহাবুব উদ্দিন খোকন. হাইকোর্টের রেজিস্টার সৈয়দ আবু মো. দিলজার হোসেন, হাইকোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্টার (প্রশাসন ও বিচার) সাব্বির ফয়েজ, লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য সচিব তাইতাস হিল্লোল রেমা।
Discussion about this post