হত্যা মামলায় ‘বিনা বিচারে’ ১৭ বছর কারাগারে থাকা মো. শিপন মিয়া (৪৫) জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বিকাল সোয়া ৫টায় গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে শিপনকে মুক্তি দেওয়া হয়।
শিপন মিয়া ঢাকার সূত্রাপুর থানার গোয়ালঘাট লেন এলাকার মো. রফিক মিয়ার ছেলে।
কাশিপুর কারাগার-২ এর জেলার মো. নাশির আহমেদ জানান, মো. শিপন মিয়া সূত্রাপুর থানার একটি হত্যা মামলায় (নং ৫৯ (১০) ১৯৯৪) ২০০০ সালে গ্রেফতার হন। ‘বিনা বিচারে’ তিনি প্রথমে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ও পরে কাশিমপুর কারাগার-২ এ ১৭ বছর বন্দি ছিলেন। বিষয়টি নজরে এলে তাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। জামিনের কাগজপত্র কারাগারে এসে পৌঁছালে যাচাই-বাছাই শেষে মঙ্গলবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে শিপনকে মুক্তি দেন কারা কর্তৃপক্ষ।
একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে শিপনকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। প্রতিবেদনটি গত ৩০ অক্টোবর আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কুমার দেবুল দে। এরপর শিপনকে ০৮ নভেম্বর হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
হাজির করার পর গত ০৮ নভেম্বর বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত শিপনকে জামিন দেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালত আদেশে বলেন, ৬০ দিনের মধ্যে শিপনের মামলার বিচার শেষ করতে হবে। সেই পর্যন্ত জামিনে থাকবেন তিনি। যদি বিচার শেষ করতে না পারেন, তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয় আদেশে।
এছাড়াও জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর শিপনের কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকলে জেলা ম্যজিস্ট্রেটের কাছে পুর্নবাসনের জন্য একটি আবেদন করতে বলা হয়।
হাইকোর্ট সূত্র জানায়, ১৯৯৪ সালে পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে দুই মহল্লার মধ্যে মারামারিতে একজন খুন হন। এ ঘটনায় মো. জাবেদ বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় মামলা করেন। মামলার দুই নম্বর আসামি মো. শিপন। এফআইআরে তার বাবার নাম ছিলো অজ্ঞাত। পরে চার্জশিটে তার বাবার নাম মো. রফিক দেওয়া হয়। ঠিকানা ৫৯, গোয়ালঘাট লেন, সূত্রাপুর বলে উল্লেখ করা হয়।
২০০০ সালের ০৭ নভেম্বর গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে ঢাকা ও কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২ তে ছিলেন শিপন।
Discussion about this post