আমাদের দেশে হিন্দু বিবাহ অবিচ্ছেদ্য হিসাবে গন্য করা হয়। বাংলাদেশের হিন্দু আইনে বিবাহ-বিচ্ছেদ সম্ভব নয়। কোন কারনে দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করা সম্ভব না হলেও বিচ্ছেদের কোন সহজতর ব্যবস্থা প্রচলিত হিন্দু আইনে নাই। বিবাদমান দম্পত্তি বড় জোর ১৯৪৬ সালের ‘বিবাহিতা নারীর পৃথক বাসস্থান ও ভরণপোষণ আইনের’ অধীনে আদালতে ‘দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধারের’ জন্য মামলা দায়ের করতে পারেন৷ তবে স্বামী কর্তৃক নিগৃহীতা নারী, এ আইনের অধীনে স্বামীর কাছ হতে পৃথক হয়েও ভরণপোষণের অধিকারী হতে পারেন,কিন্তু কোন মতেই বিবাহ-বিচ্ছেদ পাবেন না। ভারতে ১৯৫৫ সালে ‘হিন্দু বিবাহ আইন’পাশ হওয়ার পর থেকে স্বামী-স্ত্রী যে কোন পক্ষ সুনির্দিষ্ট ও যুক্তিসঙ্গত কারণ আদালতে উপস্থাপনার মাধ্যমে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে এ আইন প্রযোজ্য নয়। তবে এ ব্যাপারে সহজ বিচ্ছেদ প্রথা অবশ্যই থাকা উচিত।
উদাহরণ:
বিথীকার স্বামী অর্নব বিথীকাকে প্রায়ই মারধোর করে। ক্রমাগত নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বিথীকা আদালতে গিয়ে বিবাহ-বিচ্ছেদ চায়৷কিন্তু,যেহেতু বাংলাদেশের হিন্দু আইনে বিবাহ-বিচ্ছেদ সম্ভব নয়,সেহেতু বিথীকা বিবাহ-বিচ্ছেদ পাবে না। তবে সে ১৯৪৬ সালের ‘বিবাহিতা নারীর পৃথক বাসস্থান ও ভরণপোষণ আইনের’ অধীনে আদালতে স্বামীর কাছ হতে পৃথকভাবে বসবাসের ও ভরণপোষণের জন্য মামলা করতে পারে এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে আদালত তার প্রার্থনা মঞ্জুর করতে পারে।
তথ্যসূত্র:
(১) হিন্দু আইন – ডি. এফ. মোল্লা
(২) পারিবারিক আইনে বাংলাদেশের নারী – আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)
Discussion about this post