একে.এম নাজিম, হাটহাজারী চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ পরিবেশ আজ চরম হুমকির মুকে মারাক্তক ভাবে বিষাক্ত হয়ে উঠেছে হালদা নদী ও কর্ণফুলীর পানি। হাটহাজারীসহ আশেপাশে প্রায় ১০ লাখ মানুষের পানীয় জলের অন্যতম উৎস এই হালদা নদী দেখার যেন কেউ নেই। কিন্তু শিল্প কারখানা ও মানবসৃষ্ট বর্জ্য অনবরত নিঃসরণের মাত্র দিন দিন এত বেড়ে চলছে যে এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ভয়াবহ মানসিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে চট্টগ্রাম মহানগর সহ হাটহাজারী বাসী এমনি মন্তব্য করেছেন বিশেজ্ঞরা। তারা মনে করেন, দূষণের ভয়াবহতায় বিশ্বের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন ক্ষেত্র হালদা ও চট্টগ্রামের লাইফলাইন খ্যাত এই নদী অতীত ঐতিহ্য আজ হারানোর পথে। আশংকা করা হচ্ছে, দূষণ ও নাব্যতা কমে যাওয়ায় মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য জলজ প্রাণী অচিরেই বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।
অনুসন্দানে জানা যায়, ওয়াসার সরবরাহকৃত পানির অন্যতম উৎস চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী হালদা নদী ও কর্ণফুলী। তবে জন্ম থেকে এই নদীকে দিন দিন দূষন করছে চট্টগ্রাম মহানগরসহ হাটহাজারী বাসী। অবশ্য এই দূষন নগরজুড়ে স্থাপিত শিল্প কারখানাগুলোকেই বেশি দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমান মারাক্তক বিপর্যয়ের মুখে বিশ্বের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস প্রজণন ক্ষেত্র হালদা নদী। এই নদীর দূষণে আশেপাশের শিল্প কারখানা, ব্রিক ফিল্ড এবং কৃষিতে ব্যবহৃত কীটনাশক দায়ী। জানা যায়, হালদা নদীর তীরে ইতোমধ্যে বেশকিছু শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে, এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ও অন্যতম শিল্প কারখানাটি হচ্ছে (এশিয়াটিক পেপার মিল লিঃ) এই কারখানার অবস্থান হালদা নদীর অভয়াশ্রম থেকে ৮/৯ কি.মি দূরে এবং হালদা নদীর প্রধান উপখাল মাদারী খালের কাছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এই পেপার মিলের বর্জ্য দূষণের কারনে মাদারী খাল ও হালদা নদীর প্রচুর মাছ মারা যায় বিভিন্ন সময়। অনেক গ্রামেও টিওবলে পানি উঠছেনা এমনকি মাদারী খাল ও হালদার পানি পান কওে বিভিন্ন সময় অনেক গরু ছাগল রোগে আক্্রান্ত হয়ে পড়ার খবরও জানা গেছে। এই মিলটিতে কোন রকম বর্জ্য ব্যবস্থাপনাপ্লান্ট না থাকায় বিষক্ত রাসায়নিক পদার্থ মাদারী খালসহ অনন্যা খালের মধ্যে দিয়ে সরাসরী হালদা ও কর্ণফুলি নদীতে এসে পরে।
তাছাড়া নাজিরহাট থেকে হালদা নদীর তীরে হালদার অভয়াশ্রম এলাকায় প্রায় বেশ কয়েকটি ইট ভাটা রয়েছে, যেখানে সরাসরী হালদা নদীর পাড়ের মাটি দিয়ে ইট তৈরী করা হয় বলে জানা যায়। এই ইট ভাটা গুলোতে প্রতিনিয়ত কাঁচা কাঠ ও ভারতীয় কয়লা পোড়ানো হচ্ছে। এসব কয়লায় রয়েছে উচ্চ মাত্রার হেভী মেটালস যেমন-ক্যাডমিয়াম লেড ইত্যাদি। হালদা নদীর তীর ঘেঁসে গড়ে উঠা এসব ইটভাটায় কয়লা পোড়ানো ও অনেক হাট বাজারে জমে থাকা ময়লা আভরর্জ্যনা গুলো বৃষ্টির পানির সাথে হালদা নদীতে প্রবেশ করে ও বাসা-বাড়ির ময়লা-আবরর্জনা গুলোর কারণে নদী দূষণ সহ ফসলি জমির উরভরতা কমে যাচ্ছে। একারনে হালদা নদীর প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র, মা মাছ ও মৎস সম্পদ হুমকির মুখে পড়ছে। আগামী পূর্ণিমা তিথিতে হালদা নদীর মা মাছ ডিম ছাড়লেও এই ডিম নিয়ে সংখ্যার মধ্যে রয়েছে ডিম সংগ্রহকারীরা। এসবের বিরুদ্ধে পরিবেশ অবিদপ্তরের কোন পতিরোদ মূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
Discussion about this post